রাজাপুরে জেএসসি পরীক্ষার্থীর খাতা ছিঁড়ে ফেললো শিক্ষক ! রাজাপুর প্রতিনিধি
ঝালকাঠির রাজাপুরে জেএসসির পরীক্ষার নিজামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভেন্যুতে (সাব কেন্দ্র) জান্নাত আক্তার নামে এক জেএসসি পরীক্ষার্থীর জেএসসি পরীক্ষার মূল খাতা ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে কক্ষ পরিদর্শক শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনার সাথে সাথে শিক্ষার্থী জান্নাতের পিতা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজাপুর থানায় জিডি করেছেন।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের প্রধান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মঙ্গলবার মুঠোফোনে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের সহকারি সচিব হারুন অর রশিদকে শিক্ষা বোর্ডে স্বশরীরে হাজির হয়ে কারন দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার কৃষি শিক্ষা পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে নিজামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৪৬ নং কক্ষে পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ৪১ জন শিক্ষার্থীরা পরিদর্শক দুই শিক্ষকের নিকট খাতা জমা দেয়। ওই কক্ষের পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন পুটিয়াখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সহিদুল ইসলাম ও নিজামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহমুদ হাসান।
কিন্তু ওই শিক্ষার্থীর থাতা রাজাপুরের মূল কেন্দ্রের গাইডে জমা না দিয়ে শিক্ষকরা ছিঁড়ে কক্ষের বেঞ্চের নিচে ফেলে দেয়। পরে রাজাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গণনার সময় বিষয়টি ধরা পরে পড়ে খোজাখুজির এক পর্যায় নিজামিয়া স্কুলের সেই কক্ষে পরীক্ষার দ্বিখন্ডিত একটি ছেঁড়া খাতা অন্য এক শিক্ষক দেখতে পান। পরে খাতাটি বড়ইয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী মোসা. জান্নাতের বলে শিক্ষকরা জানতে পারেন। বিষয়টি সহকারি সচিব হারুন অর রশিদকে অবহিত করা হয়।
তিনি তাৎক্ষণিকভাবে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে বিষয়টি অবহিত করলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তদন্তের পাশাপাশি আগামি ১৯ নভেম্বর স্বশরীরে সহকারি সচিবকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
ওই কেন্দ্রের এক শিক্ষক বলেন, জান্নাতের ক্লাস রোল ৬ ও সে অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী। তবে প্রথম পরীক্ষা থেকেই জান্নাতের প্রতি কয়েকজন শিক্ষক অমানবিক আচরন করছেন। পরীক্ষা শেষে সহিদুল ইসলামের কাছে ওই খাতা জমা দেয়ার পর সেই খাতাটি ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছেন। দুই বিদ্যালয়ের মধ্যে অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্বের এ ঘটনা ঘটেছে।
জান্নাতের বাবা বাবুল হোসেন জানান, নিজামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহানাজ পারভীন গণিত পরীক্ষায় আমার মেয়ের ক্যালকুলেটর নিয়ে গিয়ে আর ফেরত দেননি। কৃষি পরীক্ষার খাতা আবার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে, এর বিচার চান তিনি।
এ বিষয়ে সহকারি সচিব হারুন অর রশিদ জানান, ‘ পরিদর্শক দুই শিক্ষককেই ঘটনার কারন দর্শানোর জন্য চিঠি দিয়েছি। এ বিষয়ে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সাথেও কথা হয়েছে। তার নির্দেশে ওই ছেঁড়া খাতাটি আলাদাভাবে সিলগালা ও প্যাকিং করে বোর্ডে পাঠানো হচ্ছে। আশা করছি এ বিষয়ে বোর্ডের আন্তরিকতায় ওই শিক্ষার্থীর ফলাফলে কোন সমস্যা হবে না।’
সম্পাদনা: জপ / বরিশাল ডেস্ক |