বল পড়ায় ছাত্রকে পিটিয়ে যখম: প্রতিবাদে অবরোধ ভাংচুর গোলাম কিবরিয়া, তালতলী
বরগুনার তালতলীর আলীর বন্দর মাধ্যমিক বিধ্যায় মাঠে ফুটবল খেলার সময় পার্শ্ববতী একটি মাছের ঘেড়ে বল পরায় তা উঠাতে গিয়ে মার ধরের স্বীকার হয়ে এখন হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে ওই বিদ্যালয়েল দশম শ্রেণির ছাত্র নেছার উদ্দিন (১৪)।
বুধবার (২৪ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার বিচারের দা্বিতে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকালে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঘন্টাব্যাপী আমতলী-তালতলী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
আলীর বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের মাঠে ফুটবল খেলছিল। খেলার সময় আকস্মিক বলটি গড়িয়ে পাশ্ববর্তী জহিরুল হকের মাছের ঘেড়ে পরে। নেছার উদ্দিন সাতরিয়ে ঘেড় থেকে বলটি তুলতে যান।
এসময় ঘেড় মালিক জহিরুল হক তা দেখে ফেলেন এবং নেছার উদ্দিনকে গালাগাল শুরু করেন। এক পর্যায়ে নেছার বল নিয়ে কিনারে আসামাত্র জহিরুল হক মাথার চুল ধরে এলোপাথারি কিল ঘুশি মারা শুরু করে। কিল ঘুষির আঘাতে নেছার উদ্দিন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে বুকে পিঠে কোমরে লাথি মেরে গুরুতর আহত করেন।
খেলার মাঠে অন্য ছাত্ররা নেছারকে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে গেলে জহিরুল হক তাদের ধমকিয়ে এবং বকাঝকা করে দুরে সড়িয়ে দেন। এক পর্যায়ে খবর পেয়ে বিদ্যালয়ের বাংলা বিষয়ের শিক্ষক শুনীল চন্দ্র তালুকদার ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে নেছারকে উদ্ধার করে রাত সাড়ে ৮টার দিকে আহত অবস্থায় আমতলী হাসাতালে এনে ভর্তি করেন।
নেছারের সহপাঠী হারুন অর রশিদ ও সজিব জানান, নেছার বল নিয়ে ঘের থেকে ওঠার পর ঘের মালিক জহিরুল হক প্রচন্ড মার ধর করে। নেছারের ডাক চিৎকার শুনে আমরা তাকে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে গেলে আমাদেরও মারধর করার হুমকি দিয়ে তারিয়ে দেয়।
উদ্ধার কারী শিক্ষক শুনীল চন্দ্র তালুকদার জানান, নেছারকে উদ্ধারের সময় তার কোন স্বাভাবিক জ্ঞান ছিলনা। ভ্যানে করে তাকে আমতলী হাসপাতালে নিয়ে আসি। বৃহস্পিতবার সকালে আমতলী হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় কোমরে বুকে পিঠে প্রচন্ড ব্যাথা নিয়ে নেছার সোজা হয়ে শুয়ে আছে।
এ প্রতিনিধিকে দেখামাত্র কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন ‘আমি কি দোষ করছি যে আমাকে এমন ভাবে মারতে হবে, আমি এর বিচার চাই’।
নেছারের বাবা বশির মোল্লা জানান, মোর পোলাডারে ছোট্র এটটু ঘটনা লইয়া এক্কেবারে মাইরা হালান ধরছিল।
আলীর বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: জামাল হোসেন জানান, নেছারকে মার ধরের ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের জরুরী সভা করা হয়েছে। সভায় সভাপত্বি করেন সভাপতি মো: আজিজুল হক সিকদার। সভায় বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হলে পরবর্তীতে কঠোর সিদান্ত নেয়া হবে।
আমতলী হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা: তাপস চন্দ্র মন্ডল জানান, নেছারের ঘারে এবং কোমরে প্রচন্ড আঘাতের কারনে ব্যাথা জমে আছে। তুচ্ছ ঘটনায় নেছারকে মারধরের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে ওই বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থীরা আমতলী-তালতলী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
এসয় সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ন বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ঘেড় মালিক জহিরুল ইসলামের টংঘড়ে হামলা করে ব্যাপক ভাংচুর করে।
অভিযুক্ত জহিরুল ইসলাম জানান, নেছারকে আমি বেশী মারধর করিনি। দুএকটি ধাক্কা দিয়েছি মাত্র।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কমলেশ চন্দ্র হালদার জানান, স্কুল ছাত্রকে মারধরের বিষয়ে এখনো আমার কাছে কেউ কোন অভিয়োগ দেয়নি। অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্পাদনা: বরি/প্রেস/মপ |