বরিশালে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট উন্নয়নে সন্তোষ: সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের উন্নয়নের সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ড. জিম ইয়ং কিম। একই সাথে বরিশালের বাবুগঞ্জের রাকুদিয়া গ্রামে বিশ্ব ব্যাংকের সাহায্যপুষ্ট `দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচি` সহ বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করে সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বরিশাল সফরে এসে বাবুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রাকুদিয়া গ্রামে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ পরিশ্রমী। তারা কোনও কাজেই পিছিয়ে পড়ে না। আমরা বাংলাদেশে অতিরিক্ত বিনিয়োগ সহায়তা দেবো।’
এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় হেলিকপ্টারে বরিশালে বিমানবন্দরে নামেন। এ সময় তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান, সংসদ সদস্য অ্যাড. তালুকদার মো. ইউনুস, পুলিশ কমিশনার রুহুল আমিন, জেলা প্রশাসক ড. গাজী সাইফুজ্জামানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পরে বাবুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রাকুদিয়া গ্রামের ‘দক্ষিণ রাকুদিয়া গ্রাম সমিতি’ পরিদর্শনে যান তিনি। সেখানে সমিতির সদস্যরা তাকে স্বাগত জানান।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত উন্নয়ন কর্মসূচির উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন জিম ইয়ং কিম। উপকারভোগী সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। সমিতির কার্যালয়ে তিনি উপকারভোগী শিউলি বেগম, সোনিয়া বেগমের বক্তব্য শোনেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলে সন্তুষ্ট হয়েছি। আমরা বাংলাদেশে অতিরিক্ত বিনিয়োগ সহায়তা দেবো।’
বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট এরপর উজিরপুর উপজেলার ভরসাকাঠী গ্রামের ভরসাকাঠী প্রাইমারি স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার পরিদর্শন করে তার প্রাঙ্গনে একটি নারিকেল চারা রোপণ করেন। তিনি এর পার্শ্ববর্তী মমতাজ বেগমের বাড়িতে স্থাপিত সৌর-বিদ্যুৎ (সোলার প্যানেল) ব্যবস্থাও পরিদর্শন করেন।
এরপর ১১.৩০ মিনিটে হেলিকপ্টারে ঢাকার উদ্দেশে বরিশাল ত্যাগ করেন জিম ইয়ং কিম।
বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের এ পরিদর্শনের সময় সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ) চেয়ারম্যান এন আ্ই চৌধুরীসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং উপকারভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসডিএফ’র চেয়ারম্যান এম.আই. চৌধুরী জানিয়েছেন, ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ব ব্যাংকের সাহায্যপুষ্ট এসডিএফ (সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন) নামে প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রাকুদিয়া গ্রামে। টেকসই সংগঠন তৈরির মাধ্যমে দরিদ্র ও অতি দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নয়ন অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছে এই প্রতিষ্ঠনটি।
পশু পালন, মৎস্য চাষসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে এই প্রতিষ্ঠান। এরপর প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা সংগঠন তৈরি ও ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়নে কাজ করেন। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে বরিশালের ৬ উপজেলায় নারীদের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করছে এসডিএফ।
৪ বছর আগেও এই গ্রামের অর্ধেকের বেশি পরিবার ছিল দারিদ্র্য সীমার নিচে। কিন্ত বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত স্যোশাল ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ) থেকে ঋণ নিয়ে এই গ্রামের অর্ধ শতাধিক নারী নতুন করে জীবন সংগ্রাম শুরু করে। বদলে যেতে থাকে তাদের সংসারের চিত্র। উন্নয়ন হতে থাকে তাদের জীবনমান। এক পর্যায়ে মুক্তি পান দারিদ্র্যের কষাঘাত থেকে। এখন স্বাবলম্বী ওই সব নারী।
সম্পাদনা: বরি/প্রেস/মপ |