অপরুপ লীলাভূমির হাতছানি কুয়াকাটা সৈকতে নিজস্ব প্রতিবেদক
কুয়াকাটা সৈকত
শীত মৌসুমে বেড়ানোটা যদি হয় সমুদ্রের তীরে তাহলে হয়তো অনেকেই আনন্দে লাফিয়ে উঠবেন। কুয়াকাটা তেমনই ভ্রমণ স্থান যেখানে সাগরের সৌন্দর্য ছাড়াও রয়েছে নৈসর্গিক নানা দৃশ্য উপভোগের সুযোগ।
সবুজ প্রকৃতি আর সমুদ্রের মেলবন্ধনের কারণে পর্যটকদের কাছে কুয়াকাটা ‘প্রকৃতির লীলাভূমি’ হিসেবে পরিচিত। একই ভ্রমণে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখা আর যদি সাগরজলে মজার স্নান করতে চান তাহলে যেতে হবে কুয়াকাটা। এদেশের একটি আকর্ষণীয় সমুদ্র সৈকত এই কুয়াকাটা। বরিশাল বিভাগের শেষপ্রান্তে পটুয়াখালি জেলায় এর অবস্থান।
আন্ধারমানিক আর রাবনাবাদ নদের মোহনায় প্রায় ৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কুয়াকাটা সৈকতের অবস্থান। এটি পৃথিবীর নিরাপদ সৈকতগুলোর অন্যতম। সমতলী সৈকতের পশ্চিমে লেম্পুচর, পূর্বে গঙ্গামতিচর- কোথাও চোরাবালির অস্তিত্ব নেই। প্রায় আধা কিলোমিটার পর্যন্ত হেঁটে যাওয়া যায় সমুদ্রের পানিতে।
নেই ভয়ংকর ঘূর্ণি পানির স্রোত। সে কারণে পর্যটকরাও এখানে নির্বিঘ্নে সমুদ্রস্নান করতে পারে। আরাকান রাজ্য থেকে ২২০ বছর আগে ২০০ রাখাইন পরিবার চলে আসে কলাপাড়া, কুয়াকাটা, তালতলী, রাঙ্গাবালীসহ সমুদ্র উপকূলীয় এ এলাকায়। জঙ্গলেই বসতি গড়ে তোলে তারা। নিরাপদ পানির জন্য খনন করে কুয়া।
শতবর্ষী সেই কুয়ার নামেই পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা গড়ে ওঠে। এখানকার ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রাখাইনরা। তাদের আবাসন সংকট দূর করার পাশাপাশি বৌদ্ধবিহার ও ঐতিহ্যের ধারক সেই কুয়াটিও সংস্কার করা হয়েছে। এসব দেখতে কুয়াকাটা ও ঐতিহ্যবাহী মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধবিহারে পর্যটকদের ঢল নামে।
২০১০ সালের ডিসেম্বরে তিন হাজার ৯৮৪ একর বনাঞ্চল জাতীয় উদ্যানে রূপান্তরিত করা হয়। বাকি ১০ হাজার একরের ফাতরা (টেংরাগিরি) বনাঞ্চলকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়। সবুজ এ প্রকৃতির মাঝে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে পর্যটকরা ভিড় করছে নিত্যদিন। লাল কাঁকড়ার লুকোচুরি দেখতে পর্যটকরা ছুটে যাচ্ছে লেম্পুচর ও গঙ্গামতির চরে। কুয়াকাটা মানেই প্রকৃতির কাছে যাওয়া। তাই এক আদিম, সরল পৃথিবীর পরশ পাওয়ার জন্য কুয়াকাটা যেন ডাকছে আমাদের।
যোগাযোগ: গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে বিভিন্ন পরিবহনের বাস সার্ভিস রয়েছে। এছাড়া সদর ঘাট নৌ টার্মিনাল থেকে বরিশাল অথবা পটুয়াখালির জাহাজে করে গিয়ে সেখান থেকে বাসে কুয়াকাটা যাওয়া যায়।
আবাসিক হোটেল: রাতে থাকার জন্য পর্যটন কর্পোরেশনের মোটেল, কুয়াকাটা গেস্ট হাউসসহ বেশকিছু বেসরকারি কটেজ, বোর্ডিং, হোটেল রয়েছে। তিন দিনের জন্য জনপ্রতি চার হাজার টাকা হলেই যথেষ্ট।
সম্পাদনা: বরি/প্রেস/মপ |