নিখোঁজের ২৭ বছর পরে বাড়িতে ফিরল জেলে মধু, প্রয়োজন উন্নত চিকিৎসা
 নিখোঁজের ২৭ বছর পরে বাড়িতে ফিরেছে জেলে মধু, বাড়িতে উৎসুক মানুষের ভীড় (ছবিঃ আমাদের বরিশাল ডটকম)
কলাপাড়া, ১৯ মে (মেজবাহউদ্দিন মাননু/আমাদের বরিশাল ডটকম): বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে গিয়ে ডাকাতের কবলে পড়ে নিখোঁজ হওয়ার দীর্ঘ ২৭ বছর পরে নিজ বাড়ি চালিতাবুনিয়া গ্রামে ফিরল মোয়াজ্জেম হোসেন মধু (৪৮)। বর্তমানে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। মোয়াজ্জেমের বাড়ি ফেরার খবরে গোটা চম্পাপুর ইউনিয়নজুড়ে বিরাজ করছে চাঞ্চল্য। তাকে দেখতে শত শত মানুষ ভিড় করছে তার বাড়িতে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদ হাওলাদারের ছেলে মোয়াজ্জেম হোসেন মধু ১৯৮৫ সালের কোন এক সময় সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে জলদস্যুদের কবলে পরে ১১ জেলেসহ নিখোঁজ হন। বহুদিন খোঁজার পরে তার পরিবারের লোকজনও হাল ছেড়ে দেয়। কিন্তু ২৭ বছর পর পিরোজপুর জেলা শহরে জেলে মধু অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় ঘুরতে থাকে। ভাগ্রক্রমে তারই শ্বশুরবাড়ি ওই এলাকায় থাকায় শ্বশুর জয়নাল গাজী তাকে চিনতে পারে। তিনি মধুকে নিয়ে যান তার বাড়িতে। পরে মধুর নিজবাড়িতে খবর দেয়।
৭ মে সোমবার সকালে তার ছোট ভাই জাকির হোসেন হাওলাদার মধুকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। মধুকে দেখার জন্য তার আত্মীয় সজনেরা ভিড় করলেও মধু কাউকে চিনতে পারছে না। অনেকটা বাকপ্রতিবন্ধীর মতো আচরণ তার। তবে সে তার মা, বাবা, স্ত্রী-সন্তানদের দেখতে চায় বলে স্থানীয়রা জানান। মধুর শরীরে একাধিক জায়গায় ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে। দরিদ্র ওই জেলে পরিবারের পক্ষে তাকে চিকিৎসা করানো এখন অনিশ্চিত হয়ে পরেছে।
মধুর ছোট ভাই জাকির হোসেন হাওলাদার জানান, দীর্ঘ ২৭ বছর আগে সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে জলদস্যুরা ১২ জন জেলে সহ ট্রলারটি অপহরন করে নিয়ে যায়। ওই সময় ভাগ্যক্রমে জলদস্যুদের কবল থেকে একজন প্রাণে রক্ষা পায়। বাকী ১১ জেলের সঙ্গে মধুও ছিল। মধুর নিখোঁজের পরে তার স্ত্রী অন্যত্র গিয়ে বিয়ে করেন। ছেলে-মেয়ে ইমাম হোসেন (৩২) ও কল্পনা বেগম (২৬) বিয়ে করে ঘর সংসার করছে। বর্তমানে মেয়ের কাছে রয়েছে মধু।
কল্পনা জানান, বাবা নিখোঁজের সময় সে ছোট ছিল। বাবাকে ঠিকই পেয়েছে। কিন্তু কিভাবে চিকিৎসা করাবে তা ভেবে এই দরিদ্র পরিবারটি এখন উদ্বিগ্ন রয়েছে।
চম্পাপুর ইউনিয়নের প্রশাসক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বদিউজ্জামান বন্টিন জানান, খবর শুনে তিনিও ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন। চিকিৎিসার জন্য কিছু সহায়তা করেছেন। তবে মধুর প্রয়োজন উন্নত চিকিৎসা।
–
(আমাদের বরিশাল ডটকম/কলাপাড়া/মেমা/তাপা)
সম্পাদনা: সেন্ট্রাল ডেস্ক |