ভিক্ষা না করলে জ্বলে না উনুন, মেলেনি বয়স্ক ভাতাও অনলাইন ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ভিক্ষা বৃত্তি বন্ধ করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। পাশাপাশি তাদের কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তখনেই শতবর্ষী এক বৃদ্ধা এক বেলা ভিক্ষা না করলে জ্বলছে না তার উনুন। বয়স প্রায় শতক হলেও পাচ্ছেন না ভাতাও।
বৃদ্ধার আক্ষেপ, এলাকার নেতারা ভোট আইলে খবর নেয়, পরে ভুলে যায়। তবে প্রধানমন্ত্রী জানলে অবশ্যই তার পাশে দাঁড়াবেন।
বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বৃদ্ধা অমৃতা হালদার তার স্বামী মনিন্দ্র হালদারকে হারিয়েছেন প্রায় দেড় যুগ আগে। তখন থেকেই একমাত্র ছেলে সুখেন্দ্র হালদার শারীরিকভাবে এতটা অসুস্থ যে তার পক্ষে কোন কাজ করা সম্ভব নয়। ফলে নিরুপায় হয়ে স্বামীর ভিটা ছেড়ে অমৃতাকে ভিক্ষার ঝুলি হাতে নিয়ে রাস্তায় নামতে হয়।
অমৃতা হালদার লঞ্চে ভিক্ষা করতে করতে বানারীপাড়া থেকে ঢাকায় চলে যান আবার ভিক্ষা করতে করতে এলাকায় ফিরে আসেন। রোদ, ঝড়, বৃষ্টি ও শীত উপেক্ষা করে পথে প্রান্তরে প্রতিদিন এভাবেই তার ভিক্ষা বৃত্তি চলে।
তার ভিক্ষার চাল ও টাকায় অসুস্থ ছেলে, প্রতিবন্ধী নাতনি ও ছেলের বউ সহ ৪ সদস্যের দরিদ্র সংসার চলে। একদিন ভিক্ষা না করলে তার ঘরে উনুন জ্বলে না। অমৃতা হালদার তার ভিক্ষা বৃত্তিতে মাঝে মাঝে ৯ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী নাতনীকেও সঙ্গী করেন।
৮ বছর ধরে তিনি বানারীপাড়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে জনৈক শাহ আলম সরদারের জীর্ণকার বাসায় মাত্র ৫শ’ টাকায় ভাড়া থেকে ভিক্ষা করে সংসার চালান।
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে এই বৃদ্ধা সাংবাদিকদের জানান- বয়স্ক ভাতা তো দূরের কথা শীত নিবারণের জন্য তার একটি কম্বলও নেই। নির্বাচনের পর আর তার খোঁজ রাখেন না কেউ। তার বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানতে পারলে অবশ্যই তার পাশে দাঁড়িয়ে দুঃখ-দুর্দশা থেকে তাকে মুক্ত করে দিবেন।
পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র শীল বৃদ্ধাকে তাৎক্ষণিক একটি কম্বল কিনে দিয়ে জানালেন, ভাতার বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে দেখবেন।
সম্পাদনা: বরি/প্রেস/মপ |