মঠবাড়িয়ায় আঞ্চলিক মহাসড়কের সংস্কারে অনিয়ম ও ধীর গতি ইসমাইল হোসেন হাওলাদার, মঠবাড়িয়া
দক্ষিণাঞ্চলের জন গুরুত্বপূর্ণ পিরোজপুর-বরগুনার আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রসস্ত করণ ও নির্মান কাজে শুরুতেই অনিয়ম ও ধীর গতীতে চলার অভিযোগ উঠছে। সড়ক প্রসস্ত করণে রাস্তা খনন করে ফেলে রাখায় দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্তবর্তী দুই জেলার চার উপজেলার লক্ষাধিক ঈদে ঘরমুখো মানুষের খানা খন্দে পরে দারুন দুভোগ পোহাতে হচ্ছে।
একনেক অনুমোদন হওয়ার পর বরগুনা-পিরোজপুর গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের ৩৬ কি.মি. নির্মানে ৫৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গত ফেব্রুয়ারী কার্যাদেশ দেয়। কার্যাদেশ পেয়ে তিনটি গ্রুপের তমা কনস্ট্রাকশন ও ওয়েস্টার বিল্ডার্স নামে দু’টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি চরখালী-মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটায় কাজ শুরু করে।
কাজের শুরুতেই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও সিডিউল মাফিক সড়ক না খোড়া, বালুর সাথে খোয়া কম দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এছাড়াও জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক খুড়ে কাজ ফেলে রাখারও অভিযোগ রয়েছে। কাজ না করার কারণে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে ১২ টি রুটের অধিকাংশই দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এছাড়াও সড়কের খোড়া খাঁদে পড়ে মালবাহী ট্রাক, বাস, পিকআপ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে যাত্রীরা আহত হচ্ছে। এ বিষয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন আইডি থেকে কাজের অনিয়মের স্ট্যাটাস দিলে ব্যাপক তোলপার সৃষ্টি হয়। এতে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি গোচর হয়।
সম্প্রতি সড়ক ও জনপথ বিভাগ পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদ মাহমুদ সুমনের নেতৃত্বে একটি দল সরেজমিনে নির্মান কাজ পরিদর্শন করেন। এসময় কাজের কিছু অনিয়মও দেখতে পায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সিডিউল মাফিক সড়ক না খোড়া, আবার খোড়া অংশের গর্তে নীচে এক ফুট বালু তার উপরে ৮ইঞ্চি বালু ও খোয়া দেয়ার কথা থাকলেও তা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার মানছে না। এছাড়াও সরেজমিনে মঠবাড়িয়া-পিরোজপুর সড়কের স্থানীয় উত্তর মিঠাখালী খান সাহেবের বাড়ির সম্মুখে ৫৪ নং মিঠাখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রবেশ দ্বার সড়কের পাশ গত প্রায় একমাস আগে রাস্তার দু’পাশ খোড়ার পর বালু ও খোয়া দিয়ে ভরাট না করে ফেলে রাখে ঠিকাদার। ফলে ওই বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে দারুন ভোগান্তিতে পড়ছে। পাশাপাশি খোড়া গর্তে দূর পাল্লার যাত্রিবাহী বাস, মাল বাহি ট্রাক খাদে পড়ে প্রতিদিনই দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
সরেজমিনে খান সাহেবের বাড়ীর সম্মুখ সড়ক হতে গুদিঘাটা ইউসুফ ফরাজীর বাড়ী পর্যন্ত সড়ক এক মাসেরও আগে খুড়ে ফেলা হয়েছে যাতে প্রতিনিয়ত সড়কের খাঁদে যানবাহন পরে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজ না করে দীর্ঘ দিন ধরে ফেলে রাখায় ঈদে ঘরমুখো মানুষের দূর পাল্লার যাত্রিরা চরম ভোগান্তিতে পরছে।
স্থানীয়রা জানান দূর পাল্লার বাসে ঈদে ঘরমুখো মানুষ বহনকারী বাস খাদে পড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তার ওপর র্দূভোগ পোহায়।
মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা সড়কের স্থানীয় বান্ধবপাড়া সড়ক খোড়ার সময় তালগাছ কেটে নেয়ার শিকর (গাছের গোড়া) অপসারণ না করেই বালু ও পাথর দিয়ে ঢেকে দিয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারী মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন বলেন, ঠিকাদারের শ্রমিকদের বারবার বালু এবং খোয়ার মধ্যে তাল গাছের গোড়া অপসারণ করে বালু এবং খোয়া দেয়ার দাবী জানালেও শ্রমিকরা তা আমলে নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদ মাহমুদ সুমন সাংবাদিকদের বলেন, সড়কের কাজটি নিজেই তদারকি করছি। সরেজমিনে কিছু ভুল ত্রুটি চোখে ধরা পরলে আমি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে নিয়ম মাফিক করার নির্দেশ দেই। রাস্তার পাশ খুড়ে কাজের বিলম্বের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই দ্রুত ঠিকাদারকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছি বলে আরও জানান।
সম্পাদনা: বরি/প্রেস/মপ |