ফেসবুকে গান গেয়ে জনপ্রিয় রাঙ্গাবালীর ইউএনও
অনলাইন ডেস্ক::: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গান গেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন এক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। কণ্ঠের জাদুতে মুগ্ধ করছেন নেটদুনিয়া।
আধুনিক বাংলা, রবীন্দ্র-নজরুলসংগীত, হারানো দিনের গান, হিন্দি ও উর্দু গজলে বেশ আসক্তি এই ইউএনওর।
দক্ষতা, কর্মতৎপরতা, পেশাদারিত্বে উদ্যোগী এই ইউএনও অবসরে সুরের মূর্ছনা দিয়ে সেই আসক্তি ঢেলে দেন ফেসবুকে।
চমৎকার গান গাইতে পারা এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নাম মাশফাকুর
রহমান। তিনি পটুয়াখালীর দ্বীপচর রাঙ্গাবালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।
মাগুরায় জন্ম এই সরকারি কর্মকর্তা ৩০তম বিসিএসের মাধ্যমে সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেন দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাঙ্গাবালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা পদে যোগ দেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসন বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন
মাশফাকুর রহমান। অধ্যয়নকালীন সেখানে ইংরেজি বিতার্কিক ছিলেন; জিয়া হল
ডিবেটিং ক্লাবের আহ্বায়কও ছিলেন তিনি।
বাংলাদেশ বেতারে ইংলিশ নিউজও পড়েছেন।তবে এসবকে ছাপিয়ে তার গান গাওয়া প্রতিভাটি বেশ বিকশিত হয়েছে। যদিও গানে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা নেননি মাশফাকুর। গানের প্রতি হৃদয়ে লালিত টান থেকেই গেয়ে যান সময়-অসময়ে।
ইতিমধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে ইউএনও মাশফাকুরের গাওয়া গান ভারতীয়
কিংবদন্তি শিল্পী হৈমন্তী শুক্লা, মান্না দে ও বাংলাদেশি শিল্পী শাকিলা
জাফর ও তপন চৌধুরীর গান।
গানের বিষয়ে ইউএনও মাশফাকুর রহমান বলেন, চাকরিটা হলো দায়িত্ব, যেখানে
চুল পরিমাণ ছাড় দেয়া চলবে না। প্রতিনিয়ত দেশ ও দশের জন্য কাজ করে যেতে হবে।
তবে জীবিকাই যে জীবনের পুরো অংশজুড়ে নয়, সে কথাও মনে করেন রাঙ্গাবালীর এই ইউএনও।
তিনি মনে করেন, চাকরিজীবনের দায়িত্বের ভিড়ে নিজের শখ পূরণে সাংস্কৃতিক
চর্চা প্রয়োজন। তাই মন ও হৃদয়ের প্রশান্তির জন্যই মূলত গান করেন তিনি।
বিষয়টি মাশফাকুর রহমানের বর্ণনায়, ‘চাকরিজীবনের অর্জনগুলো সময়ের আবর্তে
হারিয়ে যায়। আজকের ভাবনা কালকের নতুনদের কাছে সেকেলে হয়ে যায়। কিন্তু
যৌবনের গানের সুর, কবিতার পঙক্তি চিরসবুজ ও চিরকালের।’
তিনি বলেন, ‘বৃদ্ধ বয়সে আমার গাওয়া গানগুলো স্মৃতিচারণে বেশ সুখকর হয়ে উঠবে।’
মাশফাকুর রহমানের বিশ্বাস, ‘সুরের প্রতি টান অনুভব করেন যিনি, তিনি কখনও মানুষ ও সমাজের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারেন না।’
কেমন গান গাইতে বা শুনতে পছন্দ করেন– এ প্রশ্নে মাশফাকুর রহমান বলেন,
‘ছোটবেলা থেকে যে গানগুলো শুনে বড় হয়েছি, যে গানগুলোর সুর কালের সীমানা
পেরিয়ে আজও নতুনের মতো মনে হয়, সেগুলো নিজের কণ্ঠে গেয়ে দেখতে চাই।’
নিজের সন্তানদের মধ্যেও যেন সুরের প্রতি ভালোবাসা জন্মায় সে ইচ্ছা পোষণ করেন মাশফাকুর রহমান।-যুগান্তর
সম্পাদনা: বরি/প্রেস/মপ |