AmaderBarisal.com Logo

আমতলীতে ২৯ লক্ষ টাকার ড্রেন কোনই কাজে আসছে না


আমাদেরবরিশাল.কম

২৯ জুন ২০২০ সোমবার ৫:২২:৪০ অপরাহ্ন

জাকির হোসেন,আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ

আমতলী-কুয়াকাটা মহাসড়কের আমতলী বাঁধঘাট চৌরাস্তা সংলগ্ন বক্স
কালভার্ট থেকে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স পর্যন্ত সড়কের পানি নিষ্কাশনের জন্য ২৯
লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৩’শ ৭৩ মিটার ড্রেন এখন মানুষের কোনই কাজে আসছে না।
অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে ড্রেন নির্মান করায় এবং খালের সাথে সংযোগের দিক
উচু থাকায় পানি না নামায় এটি এখন মানুষের গলার কাটা হয়ে দেখা
দিয়েছে। বর্তমানে বর্ষা মৌসুমে ড্রেন দিয়ে পানি সরবরাহ না থাকায় এতে
পানি জমে চারদিকে উপচে পরায় এবং পঁচা দুর্গন্ধে জনদুর্ভোগ বেড়েছে
চরমে। ড্রেন নির্মানে নি¤œ মানের উপকরন ব্যবহারেরও অভিযোগ স্থানীয়দের।
দ্রæত এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানাগেছে, পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগ আমতলী-কুয়াকাটা মহাসড়কের
আমতলী বাঁধঘাট চৌরাস্তা বক্স কালভার্ট থেকে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স পর্যন্ত
জনসার্থে এবং পানি নিষ্কাষনের জন্য ৩’শ ৭৩ মিটার ড্রেন নির্মাণের দরপত্র
আহবান করে। কাজটি পায় মাসুদ হাইটেক নামে একটি ঠিকাদারি
প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠান মির্জাগঞ্জের ঠিকাদার বারেক মিয়া নামের একজনকে
সাব কণ্টাক দিয়ে কা করান। এ বছর ফেব্রæয়ারী মাসে তিনি ড্রেন নির্মাণ
কাজ শুরু করেন। মহাসড়কের দুই পাশে ৩’শ ৭৩ মিটার দৈঘ্য, তিন ফুট প্রস্ত ও
তিন ফুট গভীর এ ড্রেনটির। ঠিকাদার ড্রেন নির্মানের কাজ শুরুতেই তিনি
প্রাক্কলন অনুসারে কাজ করেনি। দৈঘ্য-প্রস্ত ঠিক থাকলেও ড্রেনের গভীরতা ঠিক
নেই। পানি নিস্কাশনের দিকে উচু রেখে বিপরীত দিকে ঢালু রাখা হয়। এতে ওই
ড্রেন দিয়ে পানি না নামায় এখন বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই ড্রেনে পানি
জমে উপচে চারদিকে ছরিয়ে পড়ছে। এবং এই পানির মধ্যে ময়লা আবর্জনা জমে
পঁচা দুর্গন্ধে আশ পাশের ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এছাড়া ড্রেন
নির্মানে নি¤œ মানের ইট, বালু এবং পাথর ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। উপরের
শ্লাব নির্মানে রড ও সিমেন্টের পরিমান কম দিয়ে দায়সারা ভাবে নির্মান
করায় যে কোন সময় এই শ্লাব ভেঙ্গে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন
সড়কের দুই পাশে বসবাস রত ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় ব্যাবসায়ী কবীর হোসেন মৃধা জানান, কাজের শুরুতে ঠিকাদারের এ
অনিয়মের বিষয়টি পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাব ডিভিশনাল
প্রকৌশলী মো. বেলায়েত হোসেনকে জানালেও তিনি কোন কর্নপাত করেনি।

উল্টো তিনি আমাদের সাথে খারাপ আচরন করেছেন। সোমবার সরেজমিনে
গিয়ে দেখাগেছে, ড্রেন ভর্তি পানি। খালের সংযোগের দিকে এই ভরা বর্ষা
মৌসুমেও ড্রেন শুকনা। অথচ বিপরীত দিকে ড্রেন ভর্তি পানি। এ পানিতে
ময়লা আবর্জনা জমে পঁচা দুর্গন্ধ ছরাচ্ছে। এখানে এখন মশা মাছির আভাস
স্থলে পরিনত হয়েছে। এ থেকে এখন ডেঙ্গু রোগ ছড়াতে পারে বলে জানান
ব্যবসায়ী মো. শহীদুল ইসলাম।
আমতলী চৌরাস্তার ফল ব্যবসায়ী রবিন বলেন, এটা ড্রেনেজ করা হয়নি, ময়লার
ভাগার করা হয়েছে। ড্রেন দিয়ে কোন পানি নামছে না। পঁচা দুর্গন্ধে
আমাদের এখন ব্যবসা করায় সমস্যা হচ্ছে। ওষুধ ব্যবসায়ী শাহীন তালুকদার
জানান, টাকা খরচ করে ড্রেন নির্মান করা হয়েছে। অথচ এ ড্রেন দিয়ে পানি
নামছে না। তাহলে এ ড্রেন নির্মানের প্রয়োজন ছিল না।
বরগুনা জেলা পরিষদের আমতলীর সদস্য মো. আবুল বাশার নয়ন মৃধা বলেন, সড়ক ও
জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের যোগসাজসে প্রাক্কলন অনুসারে কাজ
না করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পরিকল্পনা অনুসারে ড্রেন না করায় পানি
নিস্কাশন বন্ধ রয়েছে। ড্রেন দিয়ে পানি নিস্কাশন না হওয়ায় ময়লা আবর্জনায়
ভরে গেছে। এখন পঁচা দূর্গন্ধে এলাকায় বসবাস করা কষ্টসাধ্য ব্যপার হয়ে
দাড়িয়েছে। তিনি আরো বলেন, এটাকে কোন ড্রেন বলা যায় না। সরকারের লক্ষ লক্ষ
টাকা নষ্ট করেছে। এ ড্রেনয় আমতলীবাসীর কোন কাজে আসবে না। ড্রেন
নির্মাণে অনিয়মের সাথে জড়িতদের দ্রæত শাস্তি দাবী করছি। ঠিকাদারি
প্রতিষ্ঠানের কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা প্রতিনিধি মো. রাশেদ জানান,
অফিস ড্রেন নির্মানের অনেক টাকা আমাদের কেটে রেখেছে।
পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শামস মোকাদ্দেছ
বলেন, ড্রেন নির্মানে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
নেওয়া হবে।



সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক


প্রকাশক: মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন তালুকদার    সম্পাদক: মো: জিয়াউল হক
সাঁজের মায়া (২য় তলা), হযরত কালুশাহ সড়ক, বরিশাল-৮২০০। ফোন : ০৪৩১-৬৪৫৪৪, মুঠেফোন : ০১৮২৮১৫২০৮০ ই-মেইল : hello@amaderbarisal.com
আমাদের বরিশাল ডটকম -এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।