বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জের চরাঞ্চলে বিদেশি জাতের বারোমাসি তরমুজ চাষ করে ব্যাপক ফলন পেয়েছেন এক কৃষক। মাত্র ২৪ শতাংশ জমিতে ৩৫ হাজার টাকা খরচে ৫ জাতের তরমুজ চাষ করে লাভের আশা করছেন তিনি। দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন তার তরমুজ চাষ প্রকল্প দেখতে এসে অনুপ্রানীত হচ্ছেন অনেকে। উন্নত মানের বীজের কারণে ফলন ভালো হয়েছে দাবি সংশ্লষ্টিদের। বারোমাসি তরমুজ চাষ করলে অন্যান্যরা লাভবান হবে এবং বেকারত্ব দূর হবে আশা কৃষি কর্মকর্তাদের।
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার আন্দারমানিক গ্রামের বাসিন্দা হাসান মাহমুদ সাঈদ এবং তার স্ত্রী মোসাম্মৎ তাহমিনা দুই জনই সংলগ্ন দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। সাঈদ শিক্ষকতার পাশাপাশি ৮৬ সাল থেকে মাছের চাষ শুরু করেন। এখন তার ৪টি পুকুর, ২টি ঘের এবং পোনা উৎপাদনের একটি হ্যাচারী রয়েছে। ঘের এবং পুকুর পাড়ে আগে থেকেই বিভিন্ন সবজীর চাষ করে আসছেন তিনি। করোনাকালে স্কুল বন্ধ থাকায় একজন বীজ ব্যবসায়ীর পরামর্শে গত আষাঢ় মাসে বিদেশী জাতের ৫ ধরনের তরমুজ জাতীয় ফলের চাষ করেন তিনি।
আদর্শ কৃষক সাঈদ জানান, সুইট ব্লাক, কার্নিয়া, সোনিয়া, হানিডিউ মেলন (ছাম্মাম) এবং রক মেলন নামে বিদেশী জাতের এই চারা রোপনের ১ সপ্তাহের মধ্যে ফুল এবং ১০/১২ দিনের মধ্যে ফলন ধরে প্রতিটি গাছে। ২ মাস পরই ফল পরিনত এবং পাঁকা শুরু হয়। ২৪ শতাংশ জমিতে ৭শ’ ৫০টি চারা রোপনসহ পরিচর্যায় প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয় তার। এখন ফল বিক্রি করে ২ লাখ টাকা লাভের আশা কৃষক সাঈদের।
সাঈদের কৃষি শ্রমিক মো. কাদের বলেন, বিদেশী জাতের এই তরমুজ চাষে বাড়তি কোন ঝামেলা নেই। বীজ ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে টিস্যু দিয়ে মুড়িয়ে রেখে অঙ্কুর গজালে একটি ট্রে’তে জৈব সার সহ মাটিতে পুতে দিতে হয়। ট্রে’তে ১০/১২ দিন রেখে চারা গজানোর পর নিয়মানুযায়ী পৃথক বেড তৈরী করে চারা রোপন করতে হয়। লাল ও হলুদ রংয়ের এই তরমুজ খেতেও সুস্বাধু বলে তিনি জানান।
এদিকে বিদেশী জাতের তরমুজের ব্যাপক ফলনের খবরে দেখতে আসছেন দূর-দূরান্তের অনেকেই। বিদেশী জাতের তরমুজ চাষ দেখে নিজেরাও এই ধরনের প্রকল্প করতে অনুপ্রানীত হয়েছেন বলে জানান একজন নারী দর্শনার্থী সাফিয়া শিমু।
বরিশালের প্রসিদ্ধ বীজ ব্যবসায়ী এসএম জাকির হোসেন ও বশির হোসেন পান্নু জানান, উন্নত মানের বীজের কারনে ফলন ভালো হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে সাঈদকে কিছু বিদেশী জাতের তরমুজের বীজ দিয়েছিলেন। সাঈদ সফল হয়েছে। বারোমাসি ফল হওয়ায় ভরা মৌসুমের পর (অসময়ে) এই ফলের চাষ করলে কম পরিশ্রমে বেশি লাভ করা সম্ভব। তাদের পরামর্শ নিয়ে কৃষি করায় সাঈদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে বলে তারা জানান।
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ জানান, বারোমাসি তরমুজ চাষের জন্য তারা কৃষক সাঈদকে কারিগরিসহ সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়েছেন। সাঈদ বিদেশি জাতের তরমুজ চাষ করে লাভবান হয়েছে। অন্যারাও এই ফলের চাষ করলে লাভবান হবে এবং বেকারত্ব দূর হবে আশা কৃষি বিভাগের।
আমাদের বরিশাল ডটকম -এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
(মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। amaderbarisal.com-এর সম্পাদকীয় অবস্থানের সঙ্গে এসব অভিমতের মিল আছেই এমন হবার কোনো কারণ নেই। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে amaderbarisal.com কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না।)
৪১.৫ ডিগ্রিতে থার্মোমিটারের পারদ, তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে
কৃষক লীগ নেতাদের গণভবনে উৎপাদিত শাক-সবজি উপহার শেখ হাসিনার
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন
বোতলজাত সয়াবিনের লিটারে দাম বাড়ল ৪ টাকা
ঝালকাঠির দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার ৫ লাখ এবং আহতদের ৩ লাখ ও ১ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা