বরিশাল নগরীতে বেড়েছে মশার উপদ্রব। মশার জ্বালায় সবখানেই অতিষ্ঠ থাকতে হচ্ছে নগরবাসীকে। বাসাবাড়ি থেকে দোকানপাট, স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত সব জায়গায়ই মশার দৌরাত্ম্য। মশা থেকে বাঁচতে মানুষ দিন-রাত কয়েল জ্বালিয়ে, ওষুধ ছিটিয়ে, মশারি টাঙিয়েও যেন নিস্তার পাচ্ছে না।
বিগত বছরগুলোতে নগরীতে মশার উপদ্রব বেশি দেখা গেলেও চলতি বছর মশার উপদ্রব মাত্রাতিরিক্ত। মশার এমন উপদ্রবে নগরবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো মশাবাহিত বিভিন্ন রোগের আতঙ্ক।শুধু গত তিন মাসে নগরীতে মশা বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপনে।
প্রতি বছর মশকনিধন বাবদ সিটি কর্পোরেশন কোটি টাকা খরচ করলেও এর সুফল পাচ্ছেনা নগরবাসী।
কীটতত্ত্ববিদরা মনে করেন,নালা, খাল, জলাশয়, মজা পুকুর থেকে কচুরিপানাসহ অন্যান্য ময়লা কিউলেক্স মশার প্রজনন স্থল।এগুলো সব সময় পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়া বৃষ্টি না থাকায় ডোবা-নর্দমার পানি ঘন হয়ে পানিতে জৈব উপাদান বেড়ে যাওয়ার ফলে মশার বংশ বিস্তার হয়। এজন্য বছর জুড়েই মশা মারার কাজ করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। অন্যদিকে মাঠ পর্যায়ে মশা নিধনের দায়িত্বে যারা থাকেন তাদের কাজ নিয়মিত তদারকি, নিয়ম মেনে যথাস্থানে কীটনাশক ছিটানো, মশা মারার ওষুধ কাজ না করলে বিকল্প ব্যবস্থাসহ নগরীর জলাশয়গুলো যেন পরিচ্ছন্ন থাকে সেজন্য নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে। নাগরিকরা সচেতন হলে নগর কর্তৃপক্ষের অনেক কাজই সহজ হয়ে বলে মনে করেন তারা।
নগরীর হাসপাতাল রোডের বাসিন্দা সুমন মৃধা বলেন, বরিশাল শহরে বসবাস করি প্রায় ২০ বছরের বেশি সময়। এত মশা এর আগে কখনো দেখিনি। মশার কারণে দিনের বেলা দরজা জানালা বন্ধ করে থাকতে হয়। কয়েল ব্যবহার করেও মশা থেকে রেহাই পাচ্ছি না। এসময় মশা নিধনে সিটি কর্পোরেশন থেকে তেমন কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
পলাশপুর এলাকায় পয়ত্রিশ বছরের বেশি সময় বসবাস করেন আনিস আহমেদ। তিনি বলেন, পলাশপুরে মশা সব সময়ই বেশি। সিটি কর্পোরেশনের লোকজনও নিয়মিত মশার ওষুধ দিতে আসে না। সন্ধ্যা হলে মশার জ্বালায় বাইরে কোথাও চলাফেরা করা যায় না। দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন না করা হলে মশা বাহিত রোগ বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
কাউনিয়া হাউজিং এলাকার বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, ডাম্পিং স্টেশন কাছাকাছি থাকার কারনে প্রতি বছরই মশা বেশি থাকে এই এলাকায়।তবে এবছর যেনো তা মাত্রাতিরিক্ত।ছেলেমেয়েদের মশারি ভেতরে বসে পড়াশোনা করাতে হচ্ছে। এসময় মশা নিধনে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের যথাযথ হস্তক্ষেপও কামনা করেন তিনি।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন মশক নিধন শাখার প্রধান স্বপন কুমার দাস জানান, সারা দেশেই এখন মশা উপদ্রব একটু বেশি। আমরা সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে মশক নিধনের কার্যক্রম চালাচ্ছি। দ্রুত নগরবাসী এর সুফল পাবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ সারাদেশে গত বছর এডিস মশা বাহিত রোগ ডেঙ্গুতে রেকর্ড সংখ্যক আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে যার ধারাবাহিকতা কিছুটা এখনও রয়েছে। আর এই কিউলেক্স মশার কামড়ে প্রুরিগো সিমপ্লেক্স নামের অ্যালার্জি জনিত রোগ হয়। যেখানে আক্রান্ত হয় বেশির ভাগ শিশুরা। তাই এখন থেকে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মশক নিধনের দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে দ্রুত এই সমস্যা থেকে রক্ষায় বিসিসির পদক্ষেপের দাবী নগরবাসীর।
আমাদের বরিশাল ডটকম -এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
(মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। amaderbarisal.com-এর সম্পাদকীয় অবস্থানের সঙ্গে এসব অভিমতের মিল আছেই এমন হবার কোনো কারণ নেই। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে amaderbarisal.com কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না।)
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কক্ষ ভেঙে নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ কর্মীকে ছাড়িয়ে নিলো সহপাঠীরা
ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে নির্বাচন, ভোট হবে ব্যালটে : পটুয়াখালীতে ইসি মাছউদ
বিসিসির আড়াই কোটি টাকার সিসি ক্যামেরা অন্ধ, ভরসা পুলিশের চোখে