ভিকটিম বিএম কলেজ ছাত্রী এ গুজবের দায় নেবে কে? বিশেষ প্রতিবেদক
 ফাইল ফটো / আমাদের বরিশাল ডটকম
বিএম কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষা সফরে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সফরে যাওয়া এক বিবাহিত ছাত্রী, তার স্বামী এবং সহপাঠীদের নিয়ে যেসব অশালীন ঘটনা রটেছে তা নিছকই গুজব। আমাদের বরিশাল ডটকম’র অনুসন্ধানে এ তথ্য বেড়িয়ে এসেছে।
জানা গেছে, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের বার্ষিক শিক্ষা সফরে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) কুয়াকাটায় যায় ছাত্র শিক্ষকদের একটি দল। সেদিন সন্ধ্যায় চতুর্থ বর্ষের ওই বিবাহিত ছাত্রী তার সহপাঠী বন্ধুদের সাথে স্থানীয় মদ (মহুয়া) খেয়ে অসুস্থ হয়ে পরে। খবর পেয়ে ওই রাতেই তার স্বামী বরিশাল থেকে কুয়াকাটায় গিয়ে পৌঁছায়। সে এসে ওই ছাত্রীকে হোটেলের বাইরে নিয়ে যেতে চাইলে শিক্ষকরা বাঁধা দেন। এনিয়ে শিক্ষকদের সাথে তার সামান্য বাদানুবাদও হয়। পরে সে হোটেল থেকে চলে যায়।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) সফরকারি এই দলটি বরিশালে ফিরে আসে। এর আগেই প্রথম রাতের পুরো ঘটনা নিয়ে নানা গুজব ছড়িয়ে পরে। এর মধ্যে ওই ছাত্রী এবং তার কিছু ঘনিষ্ট ছেলে সহপাঠীকে জড়িয়ে অনেক অপ্রীতিকর মুখরোচক কেচ্ছাও ছড়াতে খাকে।
বিষয়টি প্রথমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চাপা থাকলেও পরে শিক্ষক, এমনকি সাংবাদিকদেরও কানে আসে। সফরকারিরা ফিরে আসার পর এ গুজব আরো দ্রুত বিভিন্ন মহলে ছড়াতে থাকে। তবে সংশ্লিষ্ট ছাত্রী, তার স্বামী এবং সফরকারি একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী দাবি করেছে, অজ্ঞাত আক্রোশের জায়গা থেকেইে এই গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সকলেই এ নিয়ে বিব্রত। সবচেয়ে বিপাকে পরেছে ওই ছাত্রী আর তার স্বামী। ছাত্রীর সহপাঠীদেরও নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
এ নিয়ে আলাপকালে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বসির আহমেদ আমাদের বরিশাল ডটকম’কে বলেন, ‘একটি মেয়ের ইজ্জত নিয়ে যারা বাজে গুজব ছড়াচ্ছে তাদের ঘরেও নিশ্চয়ই মা-বোন আছে। মানুষ কতটা বিকৃত রুচির হলে এটা করতে পারে তা আমি কল্পনাও করতে পারছি না।’
বসির আহমেদ আরো বলেন, ‘শিক্ষা সফরে আমরা আট জন শিক্ষক নিয়ে গিয়েছি। সাথে আমার ইন্টার পড়ুয়া মেয়ে আর স্ত্রী’ও ছিলো। হোটেলে আমাদের পাশের তিনটি রুমেই ছাত্রীদের থাকার ব্যবস্থা করেছি। রাত তিনটা অবধি নিজে সজাগ থেকে তাদের পাহাড়া দিয়েছি। হোটেলের পাহাড়াদাররাও খুব সতর্ক দৃষ্টি রেখেছে। আর এবার ছাত্র-ছাত্রীরাও আমাদের (শিক্ষকদের) কথা শুনেছে। তারা সকলেই নির্দিষ্ট সময়ে রুমে ফিরেছে। সব কিছু স্বাভাবিকই ছিলো।’
আলোচিত ছাত্রীর স্বামীর প্রসঙ্গে বসির আহমেদ বলেন, ‘সে আমাদের সাথে কুয়াকাটায় আসেনি। ওই রাতে হঠাৎ এসে ওই ছাত্রীকে স্ত্রী দাবি করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে চেয়েছিলো। কিন্তু আমি এবং আরেক শিক্ষক তাকে সে অনুমতি দেইনি। তাকে ডাক্তার বা ওষুধ হোটেলেই নিয়ে আসতে বলেছি।’ ওই ছাত্রীর অসুস্থতার কারণ ‘মাথা ব্যাথা’ বলে উল্লেখ করেছেন এই শিক্ষক।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষক জানান, মহুয়া সেবনকারি ছাত্রীর স্বামী কারো অনুমতি না নিয়ে হোটেল রুমে প্রবেশ করায় হট্টগোল হয়েছিলো। এর আগে ওই ছাত্রী মাতাল হয়ে অসুস্থ হয়ে পরার পরও হৈ চৈ হয়। এরই জেরে যত গুজবের সূত্রপাত।
সম্পাদনা: শরীফ খিয়াম |