পানিবন্দী অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ টানা বর্ষণে মনপুরায় জনজীবন বিপর্যস্ত উপজেলা প্রতিনিধি, মনপুরা
পাউবোর বেড়িবাধ না থাকায় বিচ্ছিন্ন ও দুর্গম দ্বীপ উপজেলা মনপুরার চারটি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার বাড়ি-ঘর প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে গত বৃহস্পতিবার থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত পাঁচ দিন ধরে টানা বর্ষণের পাশাপশি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায়’ও উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী রয়েছে।
উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ অলিউল্ল্যাহ জানান, গত বর্ষা মৌসুমে ঘূর্ণিঝড় মহাসিনসহ দফায় দফায় বন্যা ও অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড়ে সাকুচিয়া ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়ি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই সময়ে তাৎক্ষনিক বাঁধের নির্মান কাজ না করায় পুরো বাঁধই এখন বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। এতে একরকম অরক্ষিত রয়েছে পুরো উপজেলা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ মেরামত না করায় গত পাঁচ দিন ধরে অব্যাহত ভারী বর্ষণের কারনে নদ-নদীর পানি বেড়ে গেছে। ফলে গত কয়েকদিনের অব্যাহত বৃষ্টির কারনে ১ নম্বর, ২ নম্বর, ৩ নম্বর ওয়ার্ড ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। এতে ওই ইউনিয়নের দক্ষিণ সাকুচিয়া ও রহমানপুর গ্রামসহ প্রতিটি গ্রামের প্রায় দশ হাজার পরিবার পানির নীচে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্ধী রয়েছে পাঁচ দিন ধরে।
তিনি আরো বলেন, পানিবন্দী মানুষের চরম বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। তারা রান্না করতে পারছেননা। সেখানকার পানিবন্ধী মানুষ পানির জন্য হাহাকার করছেন।
মনপুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্ল্যাহ আল বাকি বলেন, অব্যাহত বর্ষণে মনপুরা ইউনিয়নের কলাতলির চর ও উত্তর সাকুচিয়ার চর নিজামসহ বেশীরভাগ গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, মঙ্গলবার দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা রয়েছে। সেখানে এ বিষয়ে আলোচনা করে দ্রুত প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ নির্মানের জন্য পাউবোকে বলা হয়েছে বলেও জানান ইউএনও।
এ ব্যাপারে মনপুরা উপজেলার চেয়ারম্যান সেলিনা চৌধুরী বলেন, অবিরাম বৃষ্টির কারনে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় এ উপজেলার বেশীরভাগ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী রয়েছে।
এ ব্যাপারে মনপুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম জানান, দুই ধাপে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকা বেড়িবাঁধ মেরামত ও নতুন বেড়িবাঁধ নির্মান কাজ চলছে। তবে, জোয়ারের চাপ বেশী থাকার কারনে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। মাটি কাটার শক্তিশালী মেশিন দিয়ে বাঁধের কাজ করা হবে বলেও জানান তিনি।
সম্পাদনা: বরিশাল ডেস্ক |