মনপুরার ১৫ গ্রাম প্লাবিত প্রতিনিধি, মনপুরা
ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরার ৪ টি ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ বর্তমানে জোয়ারের পানিতে ভাসছে। ৩ শতাধিক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে বলে ধারনা করছেন ভূক্তভোগীরা। জোয়ারের পানিতে মৃত্যু হয়েছে অসংখ্য গবাদী পশু-পাখির। পানিবন্ধী হওয়ায় প্রায় একহাজার একর জমির ফসলসহ বীজতলা নষ্ট হয়েছে বলে স্থানীয় চাষীরা জানায়।
প্লাবিত গ্রামগুলো ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বেশীর ভাগ গ্রামই জোয়ারের পানিতে তলিয়ে আছে। ২ বছর আগে দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের ভেঙে যাওয়া বেড়ীবাঁধ মেরামত করে না দেওয়ায় বিগত বছরের ন্যায় এবারো রহমানপুর, দক্ষিণ চরগোয়ালিয়া, সাকুচিয়া গ্রামে প্রতিদিন জোয়ারের পানি হুহু করে প্রবেশ করছে।
এছাড়া মনপুরা ইউনিয়নের আন্দিরপাড়, কুলাগাজীর তালুক, কাউয়ারটেক, ঈশ্বরগঞ্জ,সীতাকুন্ড, উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের উত্তর সাকুচিয়া গ্রাম এবং হাজীর হাট ইউনিয়নের চরযতিন, চরজ্ঞান, চর মরিয়ম, দাসের হাট গ্রামের মানুষ বর্তমানে পানিবন্ধী অবস্থায় আছে।
এদিকে বিচ্ছিন্ন চর নিজাম ও কলাতরীর চরে বেড়ী বাঁধ না থাকায় ২ টি চরে বসবাসকারী ২০ শতাধিক মানুষকে প্রতিনিয়তই দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে আরো দেখা গেছে, ঈশরগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মনপুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মনপুরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, রামনেওয়াজ বাজারসহ স্থানীয় গুরুত্বপূর্ন সড়কগুলোর উপর দিয়ে প্রবলবেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। জোয়ারের পানির তীব্রতায় পাকা সড়কের অনেকাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিবন্ধী মানুষগুলো সাইক্লোন সেন্টারে ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজ জানান, ঈশ্বরগঞ্জের পূর্বপাশের ভাঙা বেড়ী বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে আমাদের ঘর ডুবে গেছে। পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
আন্দীরপাড় ও কুলাগাজীর তালুক গ্রামের মোঃ অহিদ, মামুন, নোমান বলেন, জোয়ারের পানিতে আমাদের ঘরবাড়ি পানির মধ্যে ডুবে আছে। আমাদেরকে দেখার জন্য কেউ আসেনি। নতুন করে বেড়ীবাঁধ না হলে আমরা জোয়ারের পানিতে ভেসে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।
দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অলিউল্যাহ কাজল বলেন, ভেঙে যাওয়া বেড়ীবাঁধের কাজ দ্রুতগতিতে শেষ করেছি। কিন্তু এই জোয়ারের স্রোত তীব্র হওয়ায় নতুন নির্মিত বেড়ীবাঁধটিও পুনরায় ভেঙে গেছে।
মনপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আলাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, আমরা ভূক্তভোগী মানুষের খোজখবর নিচ্ছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছেন বলে তিনি জানান।
মনপুরা উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আবুল কালাম বলেন, পানির প্রবাহ কমে গেলে বেড়ীবাঁধ নির্মানের কাজ পুনরায় শুরু হবে।
সম্পাদনা: বরি/প্রেস/মপ |