খালে বাঁধ দিয়ে ছাত্রলীগের মাছ চাষ মেজবাহউদ্দিন মাননু, কলাপাড়া
কলাপাড়া উপজেলার সলিমপুর ও ইসলামপুর গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হাজীর খালে বাঁশ আর জালের বাঁধ দিয়ে মাছ চাষকরার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এতে চরম বিপাকে পড়েছে স্থানীয় কৃষকরা ও জেলেরা।
দুই গ্রামের মানুষ খালটি দখলমুক্ত করতে সম্প্রতি প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।
জানা গেছে, নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নবীপুর মৌজার এস এ ১৬৬০ নং দাগের হাজীর খালটির অবস্থান। জুলাই মাস থেকে নীলগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল আউয়াল হালাদার ও তার সহযোগী দেলোয়ার মৃধা, জামাল গাজী, নিয়াজ আকন, হানিফ হাওলাদার, রুহুল আমীন গাজী, আনোয়ার হোসেন, আল আমিন ও রুহুল আমিন খালটি দখল করে মাছ চাষ করেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, খালের উত্তর ও দক্ষিণ দু’দিকেই বাঁশ আর খুটির আড়াআড়ি বেড়া দেয়া হয়েছে। এরওপরে জালের বেড়ায় পানি চলাচলের পথ আটকে রাখা হয়েছে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাঁদেরকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি খালের দক্ষিণ প্রান্তের স্লুইস গেটের নিচের সিমেন্টের ব্লকটি ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় কৃষক ও জেলেদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, খালটির ওপর নির্ভরশীল কৃষকের আবাদি জমির পরিমাণ প্রায় পাঁচ হাজার একর। বিশেষ করে সবজি চাষীদের জীবন-জীবিকা চলে খালের মিঠা পানি ব্যবহারের মাধ্যমে।
খালটি দখল হওয়ায় পানি পর্যন্ত এলাকার মানুষ ব্যবহার করতে পারেনা। বহু অসহায় পরিবার ঝাকি জাল দিয়ে খালে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্তু দখল করে মাছ চাষ করায় এসব মানুষ জিম্মিদশায় পড়েছে।
কৃষক সিদ্দিকুর রহমান জানান- এ ঘটনায়র প্রতিবাদ করায় সম্প্রতি হারুন নামে তার এক ভাগ্নেকে কলাপাড়া ফেরিঘাটে আটকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে।
স্থানীয় মাওলানা মো.শহিদুল ইসলাম জানান- কৃষিকাজে খালের পানি ব্যবহার করা যায় না। খালের কাছে গেলে হাত-পা ভেঙ্গে দেয়ার হুমকি দিয়েছে দখলদারেরা।
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মাসুদ খন আমাদের বরিশাল ডটকমকে জানান- ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন তাদের কাছে বললেও কিছু করতে পারছেন না। সাধারণ মানুষ ভয়ে কিছু বলতে সাহস পায়না।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল আউয়াল হাওলাদার আমাদের বরিশাল ডটকমকে জানান- তিনি একা খাল দখল করেননি। আরো কয়েকজন এর সঙ্গে জড়িত।
সাধারণ মানুষের সমস্যা হয়না দাবি করে তিনি বলেন- এতে কৃষক বা জেলে কিংবা স্থানীয়দের কোন সমস্যা হয়না। আর মারধরের কথাও সঠিক নয়।
আরেক দখলদার ও নীলগঞ্জ ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সহসভাপতি জামাল গাজী আমাদের বরিশাল ডটকমকে জানান- তারা ১৮-২০ জনে খালটিতে বাঁধ দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করছেন।
কলাপাড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন আমাদের বরিশাল ডটকমকে জানান- অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য কৃষি কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।
সম্পাদনা: বরি/প্রেস/মপ |