গৌরনদীতে ঋণ থেকে রেহাই পেতে অগ্নিসংযোগ! গৌরনদী প্রতিনিধি
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার টরকী বন্দরে পরিকল্পিত অগ্নিসংযোগের ঘটনা ফাঁস করে দেয়ায় কাপড় ব্যবসায়ী চঞ্চল মাঝিকে বেদম মারধর করেছে অপর দুই ব্যবসায়ী।
শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরের দিকে তাকে মারধর করা হয় বলে চঞ্চল মাঝি অভিযোগ করেছেন।
আহত ব্যবসায়ী চঞ্চল মাঝি গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
গত ২৯ মার্চ ওই বন্দরে অগ্নিকাণ্ডে ৬টি গোডাউন সহ ১১টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ৮টি বসত ঘর পুড়ে যায়।
অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় ২ ব্যবসায়ী ঋণের বোঝা থেকে নিজেদের রক্ষায় পরিকল্পিতভাবে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দিয়েছে। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মাঝে নানা গুঞ্জন রয়েছে।
টরকী বন্দরের আহত ব্যবসায়ী চঞ্চল মাঝি বলেন, বন্দরের ছাগল হাটে অগ্নিকান্ডের পর ব্যবসায়ীদের সন্দেহ হয়। এ নিয়ে ভেতরে ভেতরে ব্যবসায়ীরা ফুঁসে আছেন।
বন্দরের ছাগল হাটের ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম দিপু কেয়া এন্টারপ্রাইজের নামে টরকী বন্দর ইসলামী ব্যাংক থেকে ৪৫ লাখ টাকা, অপর ব্যবসায়ী কাজী আল-আমিন আইডব্লিউ ডিস্ট্র্রিবিউশনের নামে টরকী সোনালী ব্যাংক থেকে ২৫ লাখ টাকা, বরিশাল লিজিং কোম্পানী থেকে ১৫ লাখ টাকা ঋন গ্রহন করেন।
ঋন নিয়েও ব্যবসায় সাফল্য পায়নি তারা। তাই ঋনের বোঝা থেকে রেহাই পেতে আল-আমিন আর দিপু এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে সাধারন ব্যবসায়ীদের ধারনা।
ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা জানান, আগুনে পুড়ে যাওয়া দিপু ও আল আমিনের দোকানে কোন মালামাল ছিল না। এতে তাদের সন্দেহ আরো ঘনিভূত হচ্ছে।
টরকী বন্দর বনিক সমিতির সাধারন সম্পাদক রাজু আহমেদ হারুন বলেন, অগ্নিকান্ডে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের ধারনা এটি পরিকল্পিত। এটি প্রকাশ করায় দুপুরে ব্যবসায়ী চঞ্চল মাঝিকে বেদম মারধর করে ব্যবসায়ী আল আমিন।
তিনি বলেন, আল-আমিন ও দিপু ৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১ কোটি টাকার ঋন করেছে। অগ্নিকান্ডের পর জানা যায় তাদের দোকানে কোন মালামালই ছিল না। বন্দরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে এক সভায় ব্যবসায়ীরা তাদের ক্ষোভ আর সন্দেহের কথা বলেছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যবসায়ী কাজী আল-আমিন বলেন, ভস্মীভুত দোকানের টিন ভাগাভাগি নিয়ে চঞ্চল মাঝির সাথে তার মারামারি হয়েছে । এছাড়া অন্য কোন কারন নেই।
গৌরনদী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ আবদুল করিম বলেন, তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদনে আগুনের কারণ হিসেবে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট উল্লেখ করা হয়েছে।
গৌরনদী থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, অগ্নিকান্ডের ঘটনা নিয়ে ব্যবসায়ীরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। কোন কোন ব্যবসায়ীর সন্দেহ বন্দরে পরিকল্পিতভাবে আগুন দেয়া হয়েছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাদের নির্দেশ মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক |