সব মাঠই ‘লাকি’, বললেন সাকিব ডেস্ক রিপোর্ট
উৎসবের রং লাগতে শুরু করেছে সবার মনে। উৎসবের রংটা আরও বর্ণিল করার দারুণ সুযোগ মাশরাফি-সাকিবদের সামনে। সেটি করতে জিততেই হবে আগামীকালের ‘ফাইনাল’। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১-১ সমতার পর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় এ ম্যাচ রূপ নিয়েছে ফাইনালেই। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়ের সুযোগ কাজে লাগাতে প্রত্যয়ী সাকিব আল হাসান।
এর আগে মোট চারটি দ্বিপক্ষীয় সিরিজে মুখোমুখি হয়েছে দুদল। প্রতিবারই বাংলাদেশকে সিরিজ শেষ করতে হয়েছে নত হয়ে। এই প্রথম সমীকরণটা ১-১ করে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে খেলতে নামছে বাংলাদেশ। এ অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের জন্য যেমন নতুন; দক্ষিণ আফ্রিকার জন্যও তা-ই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জেতার সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে বাংলাদেশ?
একে বড় সুযোগ বললেও ম্যাচটাকে ‘বড়’ বলতে চান না সাকিব, ‘আমাদের কাছে সব ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মাঠে নামি জেতার লক্ষ্যেই। অনেক সময় জেতা হয় না। তবে হ্যাঁ, এই ম্যাচটি সিরিজ নির্ধারণী। স্বাভাবিকভাবেই একটু বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক দিন ধরে ঘরের মাঠে আমরা সিরিজ হারিনি। আমাদের জন্য আরেকটি সুযোগ। এ ম্যাচে ভালো খেলতে পারলে আমরা জিততে পারি। অবশ্যই এটা বিরাট সুযোগ। বলব না, অনেক বড় ম্যাচ। তবে আমাদের জন্য সুযোগটা অনেক বড়।’
গত আট মাসে ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত তিনটি সিরিজের মধ্যে প্রতিটিই জিতেছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের মধ্যে রয়েছে ভারত-পাকিস্তানের মতো দল। তবে সাকিব জানালেন এ সিরিজটা জিততে পারলে ছাপিয়ে যাবে পেছনের দুটোও, ‘সিরিজটা পাকিস্তান ও ভারতের চেয়ে বড়। কারণ, এই জিনিসগুলো তো আমরা আগে কখনো করিনি। যে জিনিসটা আগে করিনি, স্বাভাবিকভাবে সেটি বড় হবে। যদি এ রকম কিছু হয় অবশ্যই বড় হবে। এখন পর্যন্ত যে সিরিজগুলো জিতেছি সেটাও বড়। এর আগে তো কখনো দক্ষিণ আফ্রিকাকে সিরিজে হারাতে পারিনি। সে কারণে এটা বড় ব্যাপার।’
এমনিতেই চাপকে বড় করে দেখেন না সাকিব। রাজ্যের চাপ জয় করেই বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার হয়েছেন। রোমাঞ্চ থাকলেও সিরিজ নির্ধারণী এ ম্যাচে আলাদা কোনো চাপ অনুভব করছেন না সাকিব, ‘ প্রেরণা বা বাড়তি চাপ, আসলে কোনটিই নয়। সিরিজ যেহেতু তিন ম্যাচের, জিততে হলে যেকোনো দলকে দুটি ম্যাচে জিততে হবে। সেই চিন্তা করে সবাই সিরিজ শুরু করে। সবাই একেকটা ম্যাচ ধরে চিন্তা করে। আমরা যেহেতু দ্বিতীয় ম্যাচ জিতেছি, সামনে বড় কিছু পাওয়ার হাতছানি। অবশ্যই সবার সেদিকেই মনোযোগ থাকবে। যাতে ম্যাচটি জিততে পারি। ঘরের মাঠে যে জয়ের ধারা চলছে চেষ্টা থাকবে সেটা অব্যাহত রাখা।’
সিরিজের আগে অতীত পরিসংখ্যান বলছিল, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সাফল্যের মূল দাওয়ায় হতে পারে স্পিন আক্রমণ। গত কয়েকটি ম্যাচের অভিজ্ঞতার পর কি একই রণকৌশলে থাকবে বাংলাদেশের? কেবল স্পিনে নয়; জিততে হলে সাকিব মনে করেন ভালো করতে হবে সব বিভাগেই, ‘ম্যাচ জিততে হলে তিন বিভাগকেই ভালো করতে হবে। এখানে শুধু স্পিনার, পেসার কিংবা ব্যাটসম্যানের আলাদা কোনো প্রতিযোগিতা নেই। প্রতিযোগিতা সবার। প্রতিযোগিতা মাঠে, মাঠের বাইরে-সব জায়গায়।’
চট্টগ্রাম এমনিতেই বাংলাদেশের জন্য পয়মন্ত। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ১৫টি ওয়ানডে খেলে নয়টিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ সাত ম্যাচের ছয়টিতেই। তবে লাকি গ্রাউন্ড-তত্ত্বে বিশ্বাসী নন সাকিব; জিততে হলে ভালো করতে হবে সব মাঠেই, ‘যে মাঠেই খেলি, জিততে হলে ভলো ক্রিকেট খেলতেই হবে। মাঠ, উইকেট কিবা পরিবেশ; যা-ই বলুন না কেন। জিততে হলে ভালো খেলতেই হবে। কেউ আসলে কখনো চিন্তা করে না যে, লাকি গ্রাউন্ডে আমরা জিতবই। আর ‘‘আনলাকি গ্রাউন্ডে’’ জিতব না। আমরা বাংলাদেশের সবগুলো মাঠেই ম্যাচ জিতছি। আমাদের সবগুলো গ্রাউন্ডই লাকি। এটা আমাদের হোম, প্রতিটি ম্যাচ এ চিন্তা করেই খেলতে নামি।’
সূত্র: প্রথম আলো
|