|
সংবাদ সম্মেলনে মায়ের অভিযোগ
গৌরনদীতে রাসেল হত্যা মামলার কোন আসামি গ্রেফতার হয়নি
গৌরনদী প্রতিনিধি আমাদেরবরিশাল.কম ২২ আগস্ট ২০১৫ শনিবার ৮:২০:৪৮ অপরাহ্ন
১৬ দিন অতিবাহিত হলেও বরিশালের গৌরনদী উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা রাসেল বেপারীকে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মামলার এজাহারভূক্ত আসামিরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের নাম উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশে থানা পুলিশ এজাহার থেকে বাদ দিয়েছে বলে নিহতের মা ও মামলার বাদি নুরুন নাহার শনিবার সকালে স্থানীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ৬ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে গৌরনদী পৌরসভায় একটি সালিশ বৈঠকে যাওয়ার জন্য তিনি তার পুত্র ছাত্রলীগ নেতা রাসেল বেপারীর মোটর সাইকেল যোগে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে তেল শেষ হওয়ায় রাসেল স্থানীয় সেন্টপিটার ফিলিং ষ্টেশনে গেলে কর্মচারী খলিলুর রহমান খালি বোতলে পেট্রল দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এনিয়ে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওইঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য একটি সাজানো মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়েরের পর পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে রাসেল নাঠৈ গ্রামে আত্মগোপন করে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও জানান, একটি মোটর সাইকেল ক্রয় করার জন্য তার পুত্র রাসেল প্রতিবেশী ছাত্রলীগ নেতা আতিকের মধ্যস্থতায় পাশ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার সেরাল গ্রামের বাবুল মাস্টারের পুত্র সাগর সেরনিয়াবাতকে ২৭ হাজার টাকা প্রদান করে। দীর্ঘদিনেও সাগর মোটর সাইকেল না দিয়ে নানা তালবাহানা করে। একপর্যায়ে আতিকের উপস্থিতিতেই গত ১ জুলাই সাগর ২০ হাজার টাকা ফেরত দেয়। বাকি পাওনা সাত হাজার টাকার জন্য গত ৭ আগস্ট সাগরকে মোবাইল করলে সে (সাগর) রাসেলকে আগৈলঝাড়ার টেমার এলাকার সিরুর দোকানে যাওয়ার জন্য বলে। রাসেল তার বন্ধু রিন্টু সরদারকে সাথে নিয়ে উক্তস্থানে পৌঁছানোর সাথে সাথেই পূর্বপরিকল্পিত ভাবে সাগর ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা অতর্কিত ভাবে হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা রাসেল ও তার বন্ধু রিন্টুকে প্রকাশ্যে ধারালো দা, ছুরি ও ইটদিয়ে উপর্যপুরি কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রাখে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা রাসেল ও রিন্টুকে মুর্মুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাৎক্ষনিক তাদের বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে রাসেল মারা যায়।
লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, রাসেল মৃত্যুর পূর্বে তার ওপর হামলাকারীদের নাম বলে যায়। সে অনুযায়ী তিনি (নিহতের মা নুরুন নাহার) বাদি হয়ে আগৈলঝাড়া থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ নানা তালবাহানা শুরু করে। একপর্যায়ে নিহতের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হামলাকারীদের মধ্যে আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খানের শ্যালক নগরবাড়ি গ্রামের মফসের হাওলাদার ওরফে মফসের ডলারের পুত্র আমিন হাওলাদারকে বাদ দিয়ে পুলিশ একটি মামলা গ্রহণ করে।
হামলাকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলো-সেরাল গ্রামের সাগর সেরনিয়াবাত, মনির শিকদার, বিপ্লব সেরনিয়াবাত, উত্তর বিজয়পুর গ্রামের মাসুম মীর, রুবেল সরদার, পালরদী গ্রামের আতিক, বিল্বগ্রামের তনু সরদার, বেলুহার গ্রামের চঞ্চল শরীফ, সজীব সরদার, নগরবাড়ীর আমিন হাওলাদার, পলাশ মোল্লা, রেজাউল সরদার, দক্ষিণ বিজয়পুর গ্রামের ইউসুফ, মামুন হাওলাদার ও মহাসিন।
এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলার ১৬দিন পরেও কোন আসামিকেই পুলিশ গ্রেফতার না করার বিষয়টি রহস্যজনক দাবি করে নিহতের মা ও মামলার বাদি নুরুন নাহার বলেন, সেন্টপিটার ফিলিং ষ্টেশনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার পুত্র রাসেলকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। যার সঠিক তদন্ত করলে মূলরহস্য বেরিয়ে আসবে।
তিনি তার পুত্র রাসেল বেপারীর হত্যার ঘটনার সঠিক তদন্তের জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অবিযোগ অস্বীকার করে আগৈলঝাড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত কোন আসামি বাদ পড়লে তদন্ত পূর্বক অভিযোগ পত্রে সংযুক্ত করা হবে।
সম্পাদনা: জপ / বরিশাল ডেস্ক
প্রকাশক: মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন তালুকদার সম্পাদক: মো: জিয়াউল হক
সাঁজের মায়া (২য় তলা), হযরত কালুশাহ সড়ক, বরিশাল-৮২০০।
ফোন : ০৪৩১-৬৪৫৪৪, মুঠেফোন : ০১৮২৮১৫২০৮০ ই-মেইল : hello@amaderbarisal.com
আমাদের বরিশাল ডটকম -এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
|
|