উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: পুরোনোরা ধরাশায়ী ‘উন্নয়ন ব্যর্থতায়’
বিশেষ প্রতিনিধি:
বরিশালের হিজলা উপজেলা পরিষদে টানা দুবারের চেয়ারম্যান ছিলেন সুলতান মাহমুদ টিপু। কিন্তু উপজেলা আওয়ামী লীগের এই সভাপতি পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে বেলায়েত ঢালীর কাছে হেরে যান আর এবার আপন ভাইয়ের কাছেই হেরে গেছেন। তার (দিপুর) নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সদ্য প্রয়াত উপজেলা চেয়ারম্যান বেলায়েত ঢালীর পুত্র নজরুল ইসলাম রাজু ঢালী ।
অপরদিকে পাশের উপজেলা মুলাদীতে দুইবারের চেয়ারম্যান তারিকুল হাসান মিঠুও নতুন মুখ জহিরউদ্দিন খসরুর কাছে হেরেছেন।
দুই উপজেলার স্থানীয় ভোটারসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের দাবি, উন্নয়ন বঞ্চনা, রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যর্থতায় ভোটাররা ওই দুই উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। গত মঙ্গলবার এই দুই উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হয়।
জানা গেছে, হিজলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী আলতাফ মাহমুদ দিপু ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ২৫ হাজার ২৫৮ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নজরুল ইসলাম রাজু ঢালী চিংড়ি প্রতীকে পান ২২ হাজার ৬৬২ ভোট। আর সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ টিপু পেয়েছেন ১ হাজার ৮৬ ভোট। এতে তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। হিজলায় ৩৮ দশমিক ৯ ভাগ ভোট পড়ে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হিজলার একজন শিক্ষক বলেন, ‘টিপু ভাই দুইবার চেয়ারম্যান থাকলেও এলাকায় উন্নয়ন করতে পারেননি; যা উন্নয়ন হয়েছে সংসদ সদস্য পংকজের হাতে হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েও নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারেননি তিনি। যে কারণে দলের একাংশ তাঁর বিরোধিতা করেছেন।’
জানতে চাইলে হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘এখানে প্রার্থী সবাই আওয়ামী লীগের। এর একাংশ এমপি পংকজের এবং অপর অংশ সংরক্ষিত আসনের এমপি ড. শাম্মী আহমেদের। ভোটে ব্যালট পেয়ে মানুষ প্রমাণ করে দিয়েছেন, এমপি পংকজকে তাঁরা পছন্দ করেন না। পংকজের প্রার্থী ছিলেন রাজু।’
দুইবারের চেয়ারম্যান হয়েও কেন টিপু জামানত হারালেন—এ প্রসঙ্গে মিলন বলেন, টিপু আর দিপু আপন দুই ভাই নির্বাচনে লড়েছেন। এখানে ভোটার ও নেতারা একজনকে বেছে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে সুলতান মাহমুদ টিপুকে মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও তিনি তা ধরেননি।
এদিকে মুলাদীতে চেয়ারম্যান প্রার্থী জহিরউদ্দিন খসরু দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে ৩৩ হাজার ৩৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তারিকুল হাসান খান মিঠু পেয়েছেন ২৬ হাজার ৯৯৩ ভোট। মুলাদীতে ভোটার উপস্থিতির হার ৩৪ দশমিক ৯১।
স্থানীয় বাসিন্দা এক আইনজীবী বলেন, ‘গত ১০ বছরে মুলাদীতে সাবেক চেয়ারম্যান মিঠুর কতিপয় ক্যাডার এলাকায় অত্যাচার করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। জনগণের সঙ্গে তাঁর আচরণও ভালো ছিল না। বিশেষ করে ১০ বছরে যে উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল, তা না হওয়ায় ভোটাররা মিঠুর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন।’
বরিশাল জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও মুলাদীর বাসিন্দা টিপু সুলতান বলেন, নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। তবে ফলাফলে জনতার ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে।
আমাদের বরিশাল ডটকম -এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
(মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। amaderbarisal.com-এর সম্পাদকীয় অবস্থানের সঙ্গে এসব অভিমতের মিল আছেই এমন হবার কোনো কারণ নেই। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে amaderbarisal.com কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না।)
পায়রা সমুদ্র বন্দর অর্থনীতির বিষফোঁড়া: পরিকল্পনা উপদেষ্টা