শাহিদা বেগম (৪৫) । বিয়ে হয়েছে কারখানা নদীর তীরে অবস্থিত কাছিপাড়ার বাহের চর গ্রামের সভ্রান্ত পরিবার সিকদার বাড়ি ২০ বছর আগে । প্রায় ৩০০ একর জমি নিয়ে বাড়িটিতে ছিল প্রায় ২০টি পরিবারে অর্ধশত মানুষ । শশুর শাশুড়ি দেবর, চাচা শশুর, পুকুর ভরা মাছ গোয়ালে গরু, মহিষ, হাঁস মুরগী অন্যান্য সম্পদ দেখে তাকে বিয়ে দেন। পটুয়াখালী বাউফলের কারখানা নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে ফসলি জমি পুকুর হারিয়েছে ।শুধু রয়েছে বাড়িসহ দেড় একর জমি । তাও আবার গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রায় দেড় একর জমিসহ বাগানবাড়িটি চলে নদীগর্ভে । ঘূর্ণিঝড় রিমালের ছোবলে বাড়ির সামনে কাঁচা সড়ক,ঘর তছনছ করেছে । এ বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে স্বভাবিক অবস্থায় ফেরার আগেই চোখের সামনে একরাতে শশুড়ের পাওয়া ফসলি জমি,বাগান,গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এখন ভাঙণ আতংকে ওই বাড়ির ১৭টি পরিবার ঘর,গরু,মহিষ,ছাগল,হাঁস মুরগী অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে । এমনই করুণ পরিণতি চলছে কাছিপাড়ার বাহের চর,হাজীপুর,কাছিপাড়া,গোপালিয়া গ্রামের মানুষের । বাহের চর গ্রামের সিকদার বাড়ির মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুররহমান(৭৬) বলেন, কারখানা নদী মোগো সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছে । বানিয়েছে পথের কাঙাল । এখন এই বয়সে একটু শান্তিতে থাকবো, কিন্তু কারখানা নদী তাদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে । বর্ষা মৌসুম এলেই কপালে চিন্তার ভাঁজ । স্বাধীনতার পরে এই নদীর তীর রক্ষায় কার্যকারি কোন ব্যবস্থা নেয়নি কোন সরকার । মাঝে মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিওব্যাগ দিলে তা জোঁয়ারের তোড়ে ভাসিয়ে নিয়ে যায় । তিনি কনকদিয়া,কাছিপাড়া এবং বগা ইউনিয়নের ৬-৭টি গ্রাম রক্ষার দাবি জানিয়েছেন । কাছিপাড়া,কনকদিয়া এবং বগার ইউপি চেয়ারম্যান ,রফিকুল ইসলাম তালুকদার, মোঃ শাহিন হাওলাদার এবং মাহমুদ হাসান হাওলাদারের ভাষ্য,কারথানা এবং লোহালিয়া নদীর তীরে ৬-৭টি গ্রাম ।আপোদকালিন সময়ে এসব গ্রাম রক্ষায় কার্যকারি কোন পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট দপ্তর । বর্ষা এলেই নদীর তীরবর্তী মানুষ জোঁয়ারে ভাসে, আর ভাটায় ঘর,বাড়ি,ফসলী জমি ভাঙে । এসব গ্রামের মানুষের কান্না থামছেনা । এ বিষয়ে তারা উপজেলা উন্নয়ন সভায় নদীর তীরবর্তী গ্রামবাসির আপোদকালিন রক্ষার দাবী জানাবেন । এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বশির গাজী বলেন, কাছিপাড়া চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার তাকে সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক সিকদারের বাড়ির এক রাতে দেড় একর জমিসহ বাগানবাড়ি নদীতে তলিয়ে গেছে ।তবে এ বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসনকে অবহিত করবেন জরুরী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যে ।
পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলাম বলেন,বিষয়টি তিনি অবহিত আছেন, তবে ভাঙণ কবলিত গ্রাম পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন ।
আমাদের বরিশাল ডটকম -এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
(মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। amaderbarisal.com-এর সম্পাদকীয় অবস্থানের সঙ্গে এসব অভিমতের মিল আছেই এমন হবার কোনো কারণ নেই। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে amaderbarisal.com কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না।)
পায়রা সমুদ্র বন্দর অর্থনীতির বিষফোঁড়া: পরিকল্পনা উপদেষ্টা