![]() মামলায় ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র ও প্ররোচনার’ অভিযোগ লতিফ সিদ্দিকীসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে
২৯ August ২০২৫ Friday ৩:৫০:১৯ PM
আমাদের বরিশাল ডেস্ক: ![]() অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির অডিটোরিয়ামে একটি গোলটেবিল বৈঠক থেকে তাঁদের আটক করা হয়। শাহবাগ থানা-পুলিশের পক্ষ থেকে দায়ের করা একটি এজাহারে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এজাহারে বলা হয়েছে, শাহবাগ থানার এসআই (নিরস্ত্র) মো. আমিরুল ইসলাম তাঁর সঙ্গীয় ফোর্সসহ থানা এলাকায় টহলরত অবস্থায় বেতারের মাধ্যমে একটি গোলটেবিল বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার খবর পান। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ দেখতে পায়, কিছু লোক ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির অডিটোরিয়ামের ভেতরে থাকা কয়েকজনকে ঘিরে ধরে ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্ট’ স্লোগান দিচ্ছে এবং এক ব্যক্তি বক্তব্য দিচ্ছেন। পুলিশ এজাহারে জানায়, তাঁরা বক্তব্যরত ব্যক্তি, সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে (৭৫) হেফাজতে নেয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, ৫ আগস্ট ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে, যার উদ্দেশ্য হলো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি ঠেকানো। সেই সংগঠনের পক্ষ থেকেই এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, উপস্থিত লোকজনের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ‘মঞ্চ ৭১’-এর ব্যানারে আসলে দেশকে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অস্থিতিশীল করে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র ও প্ররোচনামূলক বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তার এই বক্তব্যের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে লোকজন তাদের ঘিরে ধরে স্লোগান দিচ্ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে আরও ফোর্স ডেকে পাঠায়। তাদের সহায়তায় পুলিশ লতিফ সিদ্দিকীসহ আরও ১৫ জনকে আটক করে। আটককৃতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন— মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন (৭৩), শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন (৫৫), মঞ্জুরুল আলম (৪৯), কাজী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুল (৭২) এবং গোলাম মোস্তফা (৮১)। এ ছাড়া, অজ্ঞাতনামা আরও ৭০-৮০ জন ব্যক্তি এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছিল বলে এজাহারে জানানো হয়েছে। পুলিশ এজাহারে উল্লেখ করেছে, আটককৃতরা সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ এর ৬ (২) / এর (ঈ) / ১২ ধারার অধীনে অপরাধ করেছেন। আটককৃতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। ‘আমাদের সঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে’, আদালতকে অধ্যাপক কার্জন ![]() ডিআরইউতে গোলটেবিল বৈঠক থেকে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে বলে আদালতকে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন। আজ শুক্রবার শাহবাগ থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে শুনানির সময় অধ্যাপক কার্জন এ কথা বলেন। সকাল সাড়ে ১০টায় কার্জনসহ ১৬ জনকে আদালতে তোলা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই তৌফিক হাসান তাঁদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পিপি মো. শামসুদ্দোহা সুমন প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে দাবি করে তাঁদের কারাগারে আটক রাখার যুক্তি তুলে ধরেন। এ সময় অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আদালতের কাছে কিছু বলার জন্য অনুমতি চান। আদালত অনুমতি দিলে তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে মানবধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। সংবিধানের আর্টিকেল ৩৩ অনুসারে যে সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা তা দেওয়া হয়নি। আমাদের আইনজীবী ঠিক করতে দেওয়া হয়নি। আমি একজন শিক্ষক। থানায় যেখানে রাখা হয়েছিল সেখানে ফ্যান ছিল না, সাবান ছিল না। আমি সারারাত ঘুমাতে পারিনি। আমরা ভিক্টিম। সারা পৃথিবীতে ভাইরাল হয়েছে এটা। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী যা বলেছেন সব মিথ্যা। আমি এর প্রতিকার চাই। আমাদের যেভাবে হেনস্তা করা হয়েছে ৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চাই। আর এখনই জামিন দেবেন।’ সাবেক এ অধ্যাপক আরও বলেন, ‘গতকাল সকাল ১০টায় ডিআরইউতে যে প্রোগ্রাম ছিল সেটার আহ্বায়ক জহিরুল হক পান্না (জেড আই খান পান্না)। তিনি সবার পরিচিত। আর ওই মঞ্চের সদস্যসচিব, একজন বীর মুক্তিযুদ্ধো। ড. কামাল হোসেনের সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল। আমি সেখানে আলোচক হিসেবে ছিলাম। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান নিয়ে আলোচনা হয়। তখন একদল সন্ত্রাসী ঢুকে মব করে আমাদের তুলে দেয়। আমরা ভিক্টিম। যারা অপরাধী তাদের গ্রেপ্তার না করে আমাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ শুনানি শেষ হওয়ার পর আদালত কার্জনসহ সবাইকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে চারজনকে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার পথে আদালত চত্বরে সংবিধান উঁচু করে ধরেন অধ্যাপক কার্জন। তিনি বলেন, ‘৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এই সংবিধান। এটা রক্ষা করতে হবে।’ অধ্যাপক কার্জনের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখী বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর লতিফ সিদ্দিকীসহ ১৬ জনকে রাতে যেখানে রাখা হয়েছিল, সেখানে ফ্যান নেই। ধুলাবালি ছিল। তাঁদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়েছে। এটা সংবিধানের ৩৩ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন হয়েছে। আদালতকে এ কথা জানিয়েছেন কার্জন।’ সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক প্রকাশক: মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন তালুকদার সম্পাদক: মো: জিয়াউল হক
সাঁজের মায়া (২য় তলা), হযরত কালুশাহ সড়ক, বরিশাল-৮২০০।
ফোন : ০৪৩১-৬৪৫৪৪, মুঠেফোন : ০১৮২৮১৫২০৮০ ই-মেইল : hello@amaderbarisal.com
আমাদের বরিশাল ডটকম -এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। |
||


