" />
AmaderBarisal.com Logo

আমতলীতে ডিলার নিয়োগে অনিয়ম ও ঘুস বানিজ্যের অভিযোগ


আমাদেরবরিশাল.কম

২৭ October ২০২৫ Monday ১১:১৭:৫২ AM

আমতলী ((বরগুনা) প্রতিনিধি:

বরগুনার আমতলী উপজেলায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির অধীনে ডিলার নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নিতী ও ঘুস বানিজ্যের নানা অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ফের নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত, ১৮ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় দৈনিকে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃক ডিলার নিয়োগের একটি  বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ পায়। সেই নিয়োগে আমতলী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ২৯টি বিক্রয় কেন্দ্রের জন্য ২৯ জন ডিলার নিয়োগে আবেদন করতে বলা হয়েছে। সেখানে ২৪টি বিক্রয় কেন্দ্রের জন্য ২৪ জন ডিলার নিযুক্ত রয়েছে। অথচ আবেদন করার সময় আমতলী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসে যোগাযোগ করা হলে তারা ২৪টি বিক্রয়কেন্দ্র বর্ণনা দেন এবং ৫টি কেন্দ্রর কথা গোপন রাখেন। সেখানে আবেদনকারী জাকির মাতুব্বর সহ অনেকে জানতে চেয়েছেন- কোন কোন ইউনিয়নে ডিলার বাড়ানো হবে- এসব প্রশ্নে অফিস জানায়, ভোক্তা অনুসারে যেখানে বাড়ানো দরকার সেখানেই কেন্দ্র বারানো হবে। আবেদনের ছয় মাস পরে আমতলী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস লাখ লাখ টাকা ঘুসের বিনিময়ে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি ও ওএমএস মিলিয়ে ২৯ জন ডিলার নিয়োগ দেন এবং ৬২ জনের আবেদন বাতিল করেন।

এ বিষয়ে আবেদনকারী জাকির মাতুব্বরের কাছে জানতে চাইলে তিনি যুগান্তরকে জানান, ডিলার নিয়োগে আমিও একজন আবেদনকারী। আমার কাছে দুই লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল। আমি টাকা দিতে পারিনি তাই আমারটা হয়নি। আমার ওখানে যাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তিনি আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পেয়েছেন। এই নিয়োগ স্থগিত করার জন্য আমি মামলা পর্যন্ত করেছি কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি। এখনো মামলা চলোমান রয়েছে। সরকারি বিধান/ নিতীমালা ছাড়া এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দেশের সকল উপজেলায় লটারি মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কিন্তু আমতলীতে লটারি ছাড়া ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

যাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সেখানে মোটা অংকের বানিজ্য করছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ও তদন্ত কমিটি। যাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের

প্রতি জনের কাছ থেকে (দুই- তিন) লাখ টাকা করে ঘুস নিয়েছেন। আমার ওখানে লিটন নামের একজনকে আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন। আমার কাছে টাকা চেয়েছিল আমি দিতে পারিনি তাই আমারটা হয়নি।

আমরা যারা আবেদন করেছি সবাই নিয়মের ভিতরে ছিলাম এবং আমাদের সকল পেপারস আপডেট  থাকা স্বত্বেও আমরা টাকা দিতে পারিনি তাই আমাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তাই আমরা পুনরায় নিয়োগ এবং আমতলী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার বদলির জোর দাবি জানাচ্ছি।

আমতলী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জালাল ফকির বলেন, আমতলীতে খাদ্য বান্ধব ডিলার নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। বাংলাদেশের কোনো উপজেলায় এরকম অনিয়ম ও দুর্নিতী হয়নি। তাছাড়া যাদেরকে ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে নিচে ১০ হাজার ওপরে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুস দিতে হয়েছে। যারা তদন্ত করেছেন তারাও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তাছাড়া মাস্টাররুল সাবমিট করলে সেখানেও (১৮০০- ২০০০) করে টাকা দিতে হচ্ছে। আপনাদের  কষ্টকরে মোবাইলে  সাক্ষাৎকার নেওয়া লাগবে না। আমতলী আসেন যতরকম সাক্ষাৎকার লাগে আমি দিমু।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আমতলী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (ইউসিএফ) মোসাম্মদ  শারমিন জাহান যুগান্তরকে জানান, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ উঠেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রনীত। আপনারা ভালো করে খোঁজ খবর নিয়ে দেখেন। তাছাড়া ইউএনও স্যার এই নিয়োগ কমিটির সভাপতি। প্রয়োজন হলে আপনারা তার কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন।

বরগুনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক  (ডিসিফুড) কাজী সাইফুদ্দিন যুগান্তরকে জানান, আমি এখানে নতুন আসছি। সাংবাদিকদের মাধ্যমেই আমি জানতে পেরেছি আমতলীতে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি  ডিলার নিয়োগে অনেক অনিয়ম হয়েছে। খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি ও ওএমএস ডিলার নিয়োগে সরকারি কিছু নীতিমালা আছে। নীতিমালা বহির্ভূত যদি কোনো কাণ্ড করে থাকে এবং ইচ্ছাকৃত বা অন্যায়ভাবে কাউকে বাদ দিয়ে থাকে। তাহলে আমাদের জেলা কমিটির সভাপতি এবং জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে যে ব্যবস্থা নেওয়া যায় বিধি মোতাবেক সেই ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নিয়োগ কমিটির সভাপতি  রোকনুজ্জামান খান যুগান্তরকে জানান, খাদ্য বান্ধব ডিলার নিয়োগে ঘুস বানিজ্য হয়েছে কিনা আমার জানা নেই । বিধি মোতাবেক যেটা হয়েছে সেটাকেই আমরা মনোনয়ন ও নিয়োগ দিয়েছি। এখানে যে আবেদনটি সঠিকভাবে হয়েছে- সেখানেই আমরা নিয়োগ দিয়েছি। তাছাড়া তদন্ত করে দেখা হয়েছে- ঘরসহ যেগুলো যোগ্যতা থাকা দরকার সেগুলো আছে কিনা। সেগুলো দেখেই আমরা নিয়োগ দিয়েছি। আমার কাছে ডিলার নিয়োগে এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক


প্রকাশক: মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন তালুকদার    সম্পাদক: মো: জিয়াউল হক
সাঁজের মায়া (২য় তলা), হযরত কালুশাহ সড়ক, বরিশাল-৮২০০। ফোন : ০৪৩১-৬৪৫৪৪, মুঠেফোন : ০১৮২৮১৫২০৮০ ই-মেইল : hello@amaderbarisal.com
আমাদের বরিশাল ডটকম -এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।