![]() নাব্যতা হারাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের নদনদী, বিড়ম্বনার শেষ হবে কবে?
৬ December ২০২৫ Saturday ১২:০৮:২৭ PM
বিশেষ প্রতিনিধি: ![]() শীতের শুরুতেই নাব্য হারাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের নদনদী। এ বছরও ঢাকা-বরিশালসহ অভ্যন্তরীণ রুটে অনেক স্থানে জেগে উঠেছে ডুবোচর। নাব্য সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে কয়েকটি রুট। পানি কম থাকায় চরম ঝুঁকিতে যাতায়াত করছে বড় যাত্রীবাহী লঞ্চসহ অন্য নৌযানগুলো। প্রায় প্রতিদিনই নদীর তলদেশে আটকে যাচ্ছে যাত্রীবাহী নৌযান। তাই দাবি উঠেছে দ্রুত নাব্য সংকট দূরের। ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চ মাস্টাররা জানিয়েছেন, এই রুটের একটি লঞ্চ নদীপথে চলতে গভীরতা দরকার ৩ মিটার। কিন্তু বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের বাগরজা থেকে বামনীর চরের গজারিয়া ও চাঁদপুর থেকে হিজলার মেঘনার মল্লিকপুরে ভাটার সময় পানি থাকে মাত্র ১ থেকে দেড় মিটার। এ রুটের হিজলারটেক এলাকায়ও ভাটার সময় পানি থাকে দেড় মিটার। এছাড়াও কালীগঞ্জ চ্যানেলে পানি থাকে মাত্র ২ থেকে ৩ মিটার। বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জসংলগ্ন নদীতে ভাটার সময় পানি থাকে মাত্র দুই থেকে আড়াই মিটার। লঞ্চ মাস্টারদের ধীরগতিতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ডুবোচর এলাকা পাড়ি দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এছাড়াও ঢাকা-পটুয়াখালী রুটের ৯টি স্থানে ডুবোচর জেগে নাব্য কমেছে। সেই স্থানগুলোয় ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে পটুয়াখালী বিআইডব্লিউটিএ। বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটের মাস্টাররা বলেন, নাব্য সংকটের কারণে এ বছর বাহেরচর ও ভাসানচর রুট বন্ধ হয়ে গেছে। নাব্য সংকটসহ অন্য কারণে অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে একাধিক রুট। এর আগেই বরিশাল থেকে গলাচিপা, বরগুনা, পাথরঘাটা, কালাইয়া, চরকলমি, ঘোষেরহাট, লালমোহন, বোরহানউদ্দিন, ভাসানচর, কালীগঞ্জ, লেঙ্গুটিয়া, চরদুয়ানী, তুষখালী রুটে এমএল সাইজের ছোট লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে বরিশাল থেকে ভোলা, পাতারহাট, লক্ষ্মীপুর রুটসহ কয়েকটি অভ্যন্তরীণ রুটে ছোট যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করছে। নাব্য সংকট তীব্রতর হলে বাকি রুটগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে। ঢাকা-বরিশাল রুটের এমভি শুভরাজ লঞ্চের মাস্টার বেলাল বলেন, গত রাতেও বামনীর চর এলাকায় লঞ্চ ডুবোচরে আটকে গিয়েছিল। কোনোমতে যাত্রীদের নিয়ে গন্তব্যে আসতে পেরেছি। এ রুটে প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো লঞ্চ ডুবোচরে আটকে যাচ্ছে। অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চ মাস্টার মাসুদ সিকদার বলেন, ডুবোচরের কারণে সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ দুটি রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শীতের শুরুতেই যেভাবে নদীতে পানি কমছে, তাতে ড্রেজিং না করলে কিছুদিন পর লঞ্চ চালানো দায় হয়ে যাবে। লঞ্চশিল্প অদূরভবিষ্যতে হারিয়ে যাবে। ঢাকা-বরিশাল রুটের যাত্রী সুমন হাওলাদার বলেন, রাতে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ ধাক্কা অনুভব করায় জেগে উঠি। এরপর দেখতে পাই লঞ্চ চরে আটকে আছে। আধা ঘণ্টার চেষ্টায় লঞ্চটির চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ সময় গন্তব্যে পৌঁছানোর অনিশ্চয়তাসহ ভোগান্তি হয় বলে অভিযোগ এ যাত্রীর। অভ্যন্তরীণ রুটের প্রবীণ যাত্রী আবদুল জব্বার বলেন, আগে বরিশাল থেকে অন্তত ২০টি রুটে ২০০ লঞ্চ চলাচল করত। নাব্যসহ বিভিন্ন সংকটে বর্তমানে মাত্র ৩০-৩৫টি লঞ্চ টিকে আছে। নাব্য সংকট দূর করতে না পারলে যাত্রীরা আরও ভোগান্তিতে পড়বেন। বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ ও জনসুরক্ষা ফোরামের আহ্বায়ক শুভংকর চক্রবর্তী বলেন, শীতে নদীর পানি কমে গিয়ে বেশকিছু পয়েন্টে নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। এজন্য দ্রুত নদীর বালি ড্রেজিংয়ের উদ্যোগ নিতে হবে। ড্রেজিংয়ের বালি নদীতে ফেলা বন্ধ করতে হবে। মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্য ফেরাতে হবে। নইলে এ সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করবে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বরিশাল অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মামুন উর রশিদ বলেন, ঢাকা-বরিশাল রুটের কয়েকটি জায়গায় নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীপথ সচল রাখতে কার্যক্রম চলছে। সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক প্রকাশক: মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন তালুকদার সম্পাদক: মো: জিয়াউল হক
সাঁজের মায়া (২য় তলা), হযরত কালুশাহ সড়ক, বরিশাল-৮২০০।
ফোন : ০৪৩১-৬৪৫৪৪, মুঠেফোন : ০১৮২৮১৫২০৮০ ই-মেইল : hello@amaderbarisal.com
আমাদের বরিশাল ডটকম -এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। |
||

