বোলপুরে বরিশালের রান্না ঘর! শরীফ খিয়াম
 ছবিটি নির্মাতা অমিত সেনের তোলা – আমাদের বরিশাল ডটকম
পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার সুপরিচিত মহকুমা বোলপুর্। মূলত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতন আশ্রম বিদ্যালয়ের কারণে বিখ্যাত। আর এই বোলপুরেও রয়েছে বরিশালের রান্না ঘর।
খবরটি ফেসবুকের কল্যাণে পাওয়া। আসলে একটি ছবির সুবাদে। ক’মাস আগে কোলকাতার আলোচিত চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিত সেন এটি পোস্ট করেছিলেন। ছবিটি তারই তোলা। সম্ভবত মোবাইলে।
অনলাইন আলাপচারিতায় অমিত জানান, বোলপুর থেকে ইলামবাজার যাওয়ার পথে জঙ্গল শুরু হওয়ার ঠিক আগে ‘বনভিলা’ বাস স্টপ। সেখান থেকে বাম দিকের রাস্তায় ঢুকে অল্প আগালেই বনলক্ষী রিসোর্ট। এর ঠিক বিপরীতেই রয়েছে ওই বরিশালের রান্না ঘর। এটি মূলত একটি খাবারের হোটেল। রিসোর্টের সাথে সংশ্লিষ্টরাই এর প্রতিষ্ঠাতা।
রিসোর্টটি সম্পর্কে উইকিপিডিয়া জানিয়েছে, বনলক্ষী একটি ন্যাচারাল রিসোর্ট। নিরঞ্জন স্যানাল নামের এক ব্যাক্তি ১৯৬৩ এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৩ একর জায়গার ওপর তৈরী এ রিসোর্ট শাল আর ইউক্লিপটাস গাছ দিয়ে ঘেরা।
নির্মাতা অমিত সেন আসলে রিসোর্টেই গিয়েছিলেন। ফেরার পথে হঠাৎ তার চোখ আটকে যায় সাইনবোর্ডটিতে। ঝটপট ছবিও তুললেন। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে ভিতরে ঢোকা হয়নি তার। তবে অমিত বলেছেন, এরপর ওই দিকে গেলে তিনি ঠিকই সুযোগ করে বরিশালের রান্না ঘরে যাবেন।
কে এই অমিত সেন
 কর্মক্ষেত্রে অমিত সেন – আমাদের বরিশাল ডটকম
পুনের ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ইনিস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া থেকে ১৯৯০ সালে গ্রাজুয়েশন করার পর চিত্রগ্রাহক হিসাবেই প্রথম কাজ শুরু করেছিলেন অমিত সেন। একই সময়ে তিনি বিজ্ঞাপন নির্মাণের কাজও শুরু করেন। আজ অবধি সাড়ে তিনশ থেকে চারশ বিজ্ঞাপন নির্মাণ করেছেন। এরই মাঝে ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠা করেছেন নিজের প্রতিষ্ঠান ‘আইলেভেল ফিল্মস’। অবশ্য এর আগেই তিনি দক্ষ ও সফল বিজ্ঞাপন নির্মাতা হিসাবে বেশ পরিচিতি পেয়েছেন।
১৯৯৯ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে কাজ করতে এসেছিলেন অমিত। এরপর তিনি একে একে অনেকগুলো কাজ করেন এখানে। এর মধ্যে বার্জার পেইন্ট ও পিএইচপি গ্লাসের বিজ্ঞাপনগুলো অন্যতম।
২০১০ সালে মুক্তি পায় অমিতের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নটবর নট আউট। বর্তমানে তিনি হাতে নিয়েছেন বাংলা ভাষার প্রথম পূর্ণাঙ্গ খ্রি-ডি সিনেমা নির্মাণের কাজ। সুকুমার রায়ের বিখ্যাত শিশুতোষ গ্রন্থ ‘হ-য-ব-র-ল’ অবলম্বনে তৈরী হচ্ছে এটি। এছাড়া ‘গর্ত’ নামের আরো একটি সিনেমা নির্মাণ করছেন অমিত।
যে টান বহু পুরানো
বরিশাল অঞ্চলের আচার-সংস্কৃতি অমিত সেনের পরিচিতই শুধু নয়, অতি আপন। কাঠমুণ্ডুতে জন্মগ্রহনকারী এ নির্মাতার বাবা-মা দু’জনেই যে খাঁটি ‘বরিশাইল্যা’। দেশ বিভাগের পর ১৯৫০ সালে তারা দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তবে তাদের সন্তানদের কাছে বরিশাল অচেনা থাকেনি। যে কারণে আজও অমিত বরিশালের রান্না ঘরে যাওয়ার সুযোগ বের করার কথা ভাবছেন। হয়ত সেখানে গিয়ে তিনি মায়ের হাতের রান্নার স্বাদই খুঁজবেন।
লেখক : অতিথি প্রতিবেদক
সম্পাদনা: শরীফ খিয়াম |