ঝালকাঠিতে মাদরাসা ছাত্র-দোকানিদের সংর্ঘষ নিজস্ব প্রতিবেদক
ঝালকাঠির নেসারাবাদ এনএস কামিল মাদরাসা ছাত্রদের সাথে স্থানীয় দোকানিদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ছাত্র, দোকানদার ও পথচারীসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বিকাশের টাকা লেনদেনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২০টিরও বেশি দোকানে ভাঙচুর করেছে ওই মাদরাসার ছাত্ররা। পরে প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে রাত একটায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
শনিবার সকালে পুনরায় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে ঝালকাঠি পৌর মেয়র আফজাল হোসেন ও পুলিশ দু’পক্ষকে সরিয়ে নেয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এ ঘটনার প্রতিবাদে অনিদৃষ্টকালের জন্য ধর্মঘট ডেকেছেন। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উভয় পক্ষের সংঘর্ষে অহত ছাত্রদের মধ্যে অর্নাসের ছাত্রদের মধ্যে আবু সালেহ, ৫ম শ্রেণির বাদল, আবদুল্লাহ আলিম, তাহিলীর আহসান উল্লাহ, রাফি, আব্দুল্লাহ আলিম, ৭ম শ্রেণির মেহেদী হাসান, আল আমিন, মো. রিয়াদ, মো. আওলাদ, মো. রিপন,
৮ম শ্রেণির জসিম, জোবায়ের, ৯ম শ্রেণির ওমর ইকবাল, মাহফুজ, আল আমিন, ১০ম শ্রেণির মো. মেহেদী, মহিবুল্লাহ, নাঈম, আলিম শ্রেণির জহিরুল ইসলাম, মর্তুজা, দোলোয়ার হোসেন, সাইফুল ইসলাম, ফহিম, ইমরান,
ইব্রাহিম, আ. কাইউম, মোহিবুল্লাহ, জোবায়ের, রফিক, মো. নাসিম, মো. শফিউল্লাহ, ফিরোজ, কাওসার, মারজান, মিরাজ নাজিম, কামাল ও সাইফুলের নাম পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে প্রায় ৮/১০ জন ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
প্রত্যক্ষর্দশী বজলুল রহমান জানান, সন্ধ্যার দিকে ওই মাদরাসার আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্র মাহিম মোবাইল ফোন দোকানদার রুহুল আমীনের বিকাশে নম্বর থেকে না বলে দুই হাজার টাকা তার মোবাইলে সেন্ডমানি করে।
এ সময় দোকানদার বিষয়টি মাহিমের কাছে জিজ্ঞাসা করলে প্রথমে সে অস্বীকার করে। পরে চাপ প্রয়োগ করা হলে টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে মাদরাসা ছাত্র মাহিম।
এ ঘটনায় দোকানের সামনে জড়ো হওয়া লোকজন মাহিমকে মারধর করতে চাইলে রুহুল আমীন তাদের বাধা দেয়। আর বিষয়টি মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।
এরপরে মাহিমকে মারধর করেছে এমন অভিযোগ এনে রাত ১০টার দিকে মাদরাসার প্রায় অর্ধশত ছাত্র প্রথমে রুহুল আমীনের দোকানসহ ওই বাজারের কমপক্ষে ২০টি দোকান ভাঙচুর করে তারা। এতে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন।
তবে মাদরাসার শিক্ষক শহীদুল ইসলাম জানান, টাকা চুরির মিথ্যা অভিযোগ এনে মাদরাসার ওই ছাত্রকে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। যার ফলে অন্য ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে দোকান ভাঙচুর করেছে।
পরে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রাকিব, ওর শীলমনি চাকমা, পৌর প্যানেল মেয়র রেজাউল করিম জাকিব, স্থানিয় কমিশনার হুমায়ুন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মাদরাসা এলাকায় ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মাদ্রাসার শিক্ষক ও নেছারাবাদ কমপ্লেক্স এর এসিও শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন- টাকা চুরি মিথ্যা অভিযোগ এনে মাদরাসার ওই ছাত্রকে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। যার ফলে অন্য ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে দোকান ভাঙচুর করেছে।
নেছারাবাদ এনএস কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা খলিলুর রহমান নেসারাবাদী জানান- পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য ছাত্রদের ক্যাম্পাস থেকে বাহিরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। উভয় পক্ষর সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হবে।
ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল রাকিব জানান- এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। ওই এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সম্পাদনা: বরি/প্রেস/মপ |