‘আল্লায় হেগো বিচার হরবে’ সাইদুল ইসলাম মন্টু, বেতাগী
‘মোর পোলাডায় লেইখা-পড়াই চাকরি লইছে। গরীব মানুষ, হের পরও যারা মিথ্যা অপবাত দেছে হেগো আল্লায় বিচার হরবে’।
এ ক্ষোভ পুলিশ সাজেন্টে চাকরি পাওয়া এক যুবকের অসুস্থ প্রতিবন্ধী মায়ের।
ওই মায়ের দাবি, ছেলে তরিকুল ইসলাম শিমুল ১৩ আগস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর পুলিশ সার্জেন্ট পদে নিয়োগ পায়। কিন্ত নিন্দুকেরা অভিযোগ তোলে, শিমুলকে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের মেহেরগাজী করুনা গ্রামে। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে একথা হয় শিমুলের মা নাছিমা বেগমের সাথে।
জানা গেছে, শুধুমাত্র সন্দেহের বশে হয় পুলিশ সার্জেন্টের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ নিয়ে। ১৫ জুন লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হলে ভুলে তার রোল নম্বরটি বাদ পরে যায়। পরে পুলিশ সদর দপ্তর ৪৮ ঘন্টার মধ্যে শিমুলের রোল নম্বর অন্তর্ভূক্ত করে আপডেট ফলাফল প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (রিক্রুটমেন্ট অ্যান্ড ক্যারিয়ার প্লাানিং) মনিরুল ইসলাম বলেন, লিখিত পরীক্ষার ফলাফলে দুই হাজার ২৫টি রোল নম্বরের কথা বলা হলেও গণনার পর দেখা যায় রোল নম্বর আছে দুই হাজার ২৪টি। যে নম্বরটি বাদ পড়েছিল সেটি খুঁজে বের করে সেই রোলটি অন্তর্ভূক্ত করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আপডেট ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
শিমুলের পারিবার সূত্রে জানা যায়, সে ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজ থেকে হিসাব বিজ্ঞানে ২০১২ সালে অনার্স এবং ২০১৩ সালে মাস্টার্স পাস করেন। বাবা আব্দুর রব মাতুব্বর। ১৯৯৩ সালে রান্না ঘরেরমাচা ভেংগে পরে মা অসুস্থ হওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করে পৃথক বসবাস করেন। পাঁচ সদস্যর তার পরিবারের বড় ভাই নিরাপত্তাকর্মী আর ছোট ভাই গার্মেন্টসে নিয়োজিত রয়েছেন।
শিমুলের চাচাতো ভাই আব্দুর রাজ্জাক মাতুব্বর এ প্রতিবেদকের নিকট জানান, দরিদ্র পরিবারের তার জন্ম। টাকার অভাবে তার মায়ের চিকিৎসা হয়নি। প্রভাব খাটানো ও অর্থ দেওয়ারমত কোন সম্বল নেই। যোগ্যতায় চাকুরি পেয়েছে। আর্থিক লেনদেনের অবাস্তব অভিযোগের কারণে মানুষের মাঝে নানা ভ্রান্তির সৃস্টি করা হচ্ছে। এর মাধ্যম অপচেস্টা চালনো হচ্ছে সংশ্লিস্ট বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার। শিমুল বর্তমানে চলতি পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়। আগামী ৩ ডিসেম্বর মৌখিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের জন্য তাকে পত্র দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে তরিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, এখনো টিউশুনির টাকায় আমার খরচ চলে। এ থেকেই বাড়িতে পাঠাতে হয়। আর ভালো পরীক্ষা দেয়ার পরেরও আমার রোল নম্বর না দেখে কেবল সৃস্টিকর্তাকে স্মরণ করেছি। আমি ও মা এক লাখ ৫০ হাজার বার সুরায়ে ইউনুস পড়েছি। ওই দিন ছিল শবেবরাতের দিন বিকেলে আপডেট ফলাফলে আমার নাম রয়েছে বলে জানার পর পুলিশ সদর দফতরে গিয়ে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেই।
সম্পাদনা: বরি/প্রেস/মপ |