বরিশালের সরকারি হাসপাতালে আরো দুই ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু
নগর প্রতিনিধি:
ডেঙ্গুতে বরিশালে আরো দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে বিভাগে মোট ২২ জনের মৃত্যু হলো। গত ৫ মাসে বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতেই প্রায় ১২ হাজার ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হবার খবর দিয়েছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর। এরমধ্যে গত ১৫দিনে প্রায় দেড় হাজার ছাড়াও আগষ্টে বরিশালের সরকারি হাসপাতালে আরো প্রায় আড়াই হাজার ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। গতমাসেও বরিশালের সরকারি হাসপাতালে দু’জন ডেঙ্গু রোগী মৃত্যুর পরে চলতি মাসের ১৫ দিনেই মারা গেছেন আরো ৩ জন। এখনো প্রতিদিন গড়ে সোয়াশ ডেঙ্গু রোগী সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন। স্বাস্থ্য দপ্তরের মতে ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল পর্যন্ত বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলো থেকে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার ডেঙ্গু রোগী ছাড়পত্র পেয়ে ঘরে ফিরে গেলেও চিকিৎসাধীন ছিলেন আরো প্রায় সোয়া ৩শ। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে সরকারি হাসপাতালের বাইরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাটা আরো কয়েকগুন বেশী। স্বাস্থ্য বিভাগ চলতি মাসে বরিশাল ও সন্নিহিত এলকায় ডেঙ্গু সংক্রমন নিয়ে কিছুটা শংকিত আছে বলেও জানা গেছে। বিভাগীয় পরিচালকের মতে সাধারনত আগষ্ট-সেপ্টেম্বর মাসেই আমরা ডেঙ্গু নিয়ে বাড়তি সতর্কতায় থাকি। তবে আগষ্টের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি পরিলক্ষিত হলেও তা ছিল সাময়িক। গত বছরও সেপ্টেম্বরের শেষভাগ পর্যন্তই বরিশাল অঞ্চলজুড়ে ডেঙ্গু দাপিয়ে বেড়িয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিলের শুরু থেকেই এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু বরিশাল অঞ্চলে হানা দিতে শুরু করে। কিন্তু মে মাসের মধ্যভাগ থেকেই পরস্থিতির অবনতি শুরু হয়ে জুনের শেষভাগ পর্যন্ত সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ডেঙ্গুরোগী ভর্তির পাশাপাশি মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয় ১২ জনের নাম। কিন্তু জুলাই মাসে পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত থেকে মাসের প্রথম ১৫ দিনেই দুই সহ¯্রাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু ডেঙ্গু নিয়ে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছিল। জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৮১৩১ জনে উন্নীত হবার পরে একমাসের মাথায় তা সাড়ে ১০ হাজারে পৌছায়। সেপ্টেম্বরের প্রথমদিন দুপুর পর্যন্ত এ অঞ্চলের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ১১৯ রোগীকে ছাড়পত্র দেয়ার পরে অরো ৩শতাধিক ডেঙ্গুরোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। সোমবার শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৭ জন এবং জেলার অন্যান্য হাসপাতালে আরো ২৫ জন চিকিৎসাধীন ছিলেন। এপর্যন্ত মৃত ২২ জনের মধ্যে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাপসাতালেই মারা গেছেন ১২ জন। গত ১৫ দিন ধরেই সরকারি হাসপাতালগুলোতে নতুন করে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ছে। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী এখনো এডিস মশা ও তার লার্ভা ধ্বংসের তৎপরতার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল মহল। এবার শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে ডেঙ্গু সংক্রমন অনেক বেশী। এ অঞ্চলের অনেক গ্রামের ৬৮ শতাংশ বাড়ীতেই এডিস মশার লার্ভার অস্তিত্ব পেয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের পর্যবেক্ষক দল। গত কয়েকমাসে পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন করে পুরনো এলাকার পরিবর্তে নতুন কিছু এলাকায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার বার্তা দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে আর্থিক সংকটের সাথে ফগার মেশিন এবং হ্যান্ড স্প্রেয়ারের অভাবের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় এ অঞ্চলের পৌরসভাগুলো মশক নিধনে তেমন কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না। ইউনিয়ন পরিষদগুলোর পক্ষে এ ধরনের কার্যক্রম গ্রহণের বিষয়টিকে অবান্তর বলছেন তারা। এদিকে লঘু চাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী আয়ু সক্রিয় থাকায় গত কয়েকদিন ধরেই বরিশাল অঞ্চলজুড়ে কখনো রোদ,কখনো মেঘ আর বৃষ্টির ফলে এডিস মশার বংশ বিস্তারে অনুকুল পরিবেশ তৈরী করছে।
আমাদের বরিশাল ডটকম -এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
(মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। amaderbarisal.com-এর সম্পাদকীয় অবস্থানের সঙ্গে এসব অভিমতের মিল আছেই এমন হবার কোনো কারণ নেই। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে amaderbarisal.com কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না।)
দুর্গাপূজায় ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন পেল ৩৭ প্রতিষ্ঠান