পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় উৎপাত বেড়েছে ভূমিদস্যুদের, অন্যের জমির ধান কেটে নেওয়ার নেশায় মেতে উঠেছে তারা। সারা দেশে শীত পড়তে শুরু করেছে। আর এই সময় কৃষকরা ব্যস্ত থাকেন তাদের পেঁকে যাওয়া ফসল ঘরে তুলতে। ঠিক এই সময়ই উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে করিম বাজার এলাকায় কৃষকের কষ্টার্জিত ফসলের উপর কালো থাবা মারছেন জোর দখলদাররা। তারা কৃষকের জমির ধান জোর করে কেটে নিচ্ছেন। এতে কৃষকের আনন্দের পরিবর্তে মাথায় হাত উঠেছে। এমনই ঘটনার শিকার হয়েছেন কৃষক মো. মামুন মিয়া গং। মামুন মিয়া (৪৮) হচ্ছেন ডাকুয়া ইউনিয়নের আটখালী গ্রামের মো. ফজলুল হক মিয়ার ছেলে। জোর দখলবাজ ভূমিদস্যুরা মামুন মিয়া গংদের প্রায় ১৮ একর জমির পাকা ধান প্রতিপক্ষরা দলবল নিয়ে কেটে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে মামুন মিয়া বলেন, আমরা প্রায় ১৮ একর জমিতে ধান উৎপাদন করেছি বর্গাচাষী দিয়ে। গত বুধবার (০৩ ডিসেম্বর) দিনভর ধান কাটার মেশিন দিয়ে আমাদের সকল ধান কেটে নিয়ে যায় আমাদের এলাকার আমির হোসেন মোল্লা, আবুল মোল্লা, নজরুল মোল্লা, রফিক মোল্লা, জাহাঙ্গীর মোল্লা, মন্নান মোল্লা, জিয়া মোল্লা, ইলিয়াস মোল্লা, সাইদুল মোল্লা, শাহিনুর বেগম সহ আরো নাম না জানা ১৫/২০ জন সংঘবদ্ধ লোক। আমি গলাচিপা থানায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি। গলাচিপা থানা থেকে এসআই হাকিম ঘটনাস্থলে যান এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে গলাচিপা থানায় শনিবার সন্ধ্যায় দু’পক্ষকে নিয়ে বসবেন বলে জানান। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কৃষক মো. দেলোয়ার সরদার, আশ্রাফ আকন, আজিম মিয়া, ফারুক গাজী, মনির গাজী, রফিক গাজী, মুজাম্মেল, আনছার গাজী, লিটন গাজী এরা জানান, আমাদের বাব-দাদারা ভূমিহীন হিসেবে সরকার বাহাদুরের কাছ থেকে বন্দোবস্তকৃত ও রেকর্ডিয় সূত্রে মালিকানা জমি দীর্ঘদিন ধরে বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে আসছি। প্রতিপক্ষরা দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের এই জমি দখলের পায়তারা করে আসছে। এ নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে ৮৮৪/২৩ নং মামলা চলমান আছে। আদালতের স্টে থাকা সত্বেও আদালতের আদেশ অমান্য করিয়া প্রতিপক্ষরা হারভেস্টার মেশিনের সাহায্যে জোরপূর্বক জমির পাকা ধান কেটে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাধা দিলে প্রতিপক্ষরা মারধোর ও প্রাণনাশের হুমকি দেন এবং আমাদের ৩/৪ জনকে মারধর করেন। এসময় প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ধান কেটে ট্রাকে করে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষরা। আমরা এখন পথে বসে গেলাম। সারা বছরের শ্রম ও কষ্টার্জিত ফসল নিমেশেই শেষ করে দিল। এখন মানুষের কাছে হাত পাতা ছাড়া আমাদের বাঁচার মত কোন উপায় নেই। আমরা আইনের কাছে ন্যায়বিচার চাই। ধান কেটে নেয়ার বিষয়ে প্রতিপক্ষ আমির হোসেন মোল্লা, আবুল মোল্লা, নজরুল মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তারা অভিযোগটি অস্বীকার করেন। তারা বলেন, এই জমির মালিক আমরা তাই আমাদের জমির ধান আমরা কেটেছি। এ বিষয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী গলাচিপা থানা পুলিশের এসআই হাকিম বলেন, শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বলেছি এবং মীমাংসার জন্য দু’পক্ষকে থানা ডাকা হয়েছে। এ বিষয়ে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুর রহমান বলেন, ধান কেটের নেয়ার একটি অভিযোগ পেয়েছি। সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় দু’পক্ষের কাগজপত্র সহ থানায় ডাকা হয়েছে।
আমাদের বরিশাল ডটকম -এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
(মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। amaderbarisal.com-এর সম্পাদকীয় অবস্থানের সঙ্গে এসব অভিমতের মিল আছেই এমন হবার কোনো কারণ নেই। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে amaderbarisal.com কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না।)