Current Bangladesh Time
Monday October ২৭, ২০২৫ ১০:১৫ PM
Barisal News
Latest News
Home » পটুয়াখালী » রাঙ্গাবালী » ঐতিহ্য ও  সংস্কৃতির কাচারি ঘর হারিয়ে যাচ্ছে  !     
২৭ October ২০২৫ Monday ৬:৫০:০৮ PM
Print this E-mail this

ঐতিহ্য ও  সংস্কৃতির কাচারি ঘর হারিয়ে যাচ্ছে  !     


 মোঃ ফিরোজ ফরাজী, রাঙাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:                                                                              

 একসময় গ্রামীণ জনপদের অধিকাংশ গৃহস্থের বাড়িতেই ছিল কাচারি ঘর। কাচারি ঘর ছিলো গ্রাম বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্য,কৃষ্টি ও সংস্কৃতির একটি অংশ। কালের বিবর্তনে আজ কাচারি ঘর বাঙালির সংস্কৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। গেস্টরুম কিংবা ড্রয়িং রুমের আদি ভার্সন কাচারি ঘর। এখন আর গ্রামীণ জনপদে কাচারি ঘর দেখা যায় না।

আদিকালে মূল বাড়ি থেকে একটু দূরে আলাদা খোলামেলা  জায়গায় কাচারি ঘরের অবস্থান ছিল । অতিথি, পথচারী কিংবা সাক্ষাৎপ্রার্থীরা এই ঘরে এসেই বসতেন। প্রয়োজনে এক-দুই দিন রাত যাপনেরও ব্যবস্থা থাকতো কাচারি ঘরে। 

কাচারি ঘর ছিল বাংলার অবস্থাসম্পন্ন  ও মধ্যবিত্তের গৃহস্থের আভিজাত্যের প্রতীক। মরহুম আঃরব খলিফা (কান্দার বাড়ি) বাড়ির, ফরাজী বাড়ির, মরহুম আব্দুর রাজ্জাক চান চেয়ারম্যান বাড়ি, মরহুম চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন আকন বাড়ি , মরহুম চেয়ারম্যান হাজী আব্দুল মন্নান হাওলাদার বাড়ি সহ প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই ছিল কাচারি ঘর। চারিদিকে ঢেউ টিনের বেড়া সঙ্গে কাঠের কারুকাজ করে উপরে টিন অথবা ছনের ছাউনি থাকতো কাচারি ঘরে। যা অতি প্রাকৃতিকবান্ধব পরিবেশ দিয়েআবেষ্টিত ছিল। কাচারি ঘর সম্পর্কে পঞ্চাশোর্ধ ফেরদৌস  তিনি বলেন আমার আব্বার আমলে কাচারি ঘর ছিল সব কিছুর কেন্দ্রবিন্দু, আমাদের লেখাপড়া ও ঘুমানো খাওয়া-দাওয়া কাজের লোকসহ সবাই ছিলাম কাছারি ঘর ছাড়া একদিন ও চলতো না। ৮০ বছরের বৃদ্ধ বলেন আমার ছেলেরা কাছারি ঘরে থাকতো ,লেখাপড়া করত ওখানে আমি নামাজ পড়তাম , বিচার সালিশ হত ,মেহমান আসলে খাওয়া দাওয়া করতাম ,কাজের লোকেরা রাতে ঘুমাতো, এখন তো শুধুই স্মৃতি।

তখনকার যুগে বৈদ্যুতিক পাখা না থাকলে কাচারি ঘড় ছিল আরামদায়ক শীতল পরিবেশ। তীব্র গরমেও কাচারি ঘরের খোলা জানালা দিয়ে হিমেল বাতাস বইতো। আলোচনা, শালিস বৈঠক, গল্প-আড্ডার আসর,বসতো কাচারি ঘরে। 

আগের দিনে নিজেদের পারিবারিক অনুষ্ঠানে মানুষজন বেশি হলে ছেলেরা কাচারি ঘরে থাকতেন আর মেয়েরা থাকতেন ভিতরে বাড়িতে।

বর্ষা মৌসুমে গ্রামের লোকজনদের উপস্থিতিতে কাচারি ঘরে বসতো পুঁথি পাঠ ও জারি গান । পথচারীরা এই কাচারি ঘরে ক্ষণিকের জন্য বিশ্রাম নিতেন। বিপদে পরলে রাত যাপনের ব্যবস্থা থাকতো কাচারি ঘরে।

গৃহস্থের বাড়ির ভিতর থেকে খাবার পাঠানো হতো কাচারি ঘরের অতিথিদের জন্য। আবাসিক গৃহশিক্ষকের (লজিং মাস্টার)ও আররি শিক্ষার ব্যবস্থার জন্য কাচারি ঘড়ের অবদান অনস্বীকার্য। মাস্টার ও আররি শিক্ষকগণ কাচারি ঘরে থাকার ব্যাবস্থা করা হত।

কোন কোন বাড়ির কাচারি ঘর সকাল বেলা মক্তব হিসেবেও ব্যবহৃত হত।

জানা যায়, ঈশা খাঁর আমলে কর্মচারীদের খাজনা আদায়ের জন্য কাচারি ঘর ব্যবহার করা হতো। জমিদারী প্রথার সময়ও খাজনা আদায় করা হতো গ্রামের প্রভাবশালী গ্রাম্য মোড়লের বাড়ির সামনের কাচারি ঘরে বসে। এখন আর কাচারি ঘর তেমন চোখে পরে না। 

রাঙাবালীতে এলাকার কিছু গ্রামে অত্যন্ত জীর্ণ শীর্ণ অবস্থায় কাচারি ঘর দেখতে পাওয়া যায়।

সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক

শেয়ার করতে ক্লিক করুন:

আমাদের বরিশাল ডটকম -এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
(মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। amaderbarisal.com-এর সম্পাদকীয় অবস্থানের সঙ্গে এসব অভিমতের মিল আছেই এমন হবার কোনো কারণ নেই। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে amaderbarisal.com কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না।)
বালুর বস্তায় ঠেকিয়ে চলছে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ সেতু
বরিশালে খুচরা বাজারে সবজির দাম চড়া
বরিশালে তরুণীকে ধর্ষণে ৪ জনের ফাঁসি
ব‌রিশাল-৫ (সদর ও নগর): গুরু-শিষ্যদের লড়াই থামাতে মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশ কেন্দ্রের
বরিশাল বিভাগের ২১ আসন: গুলশানে ডাক পেলেন ৬০ মনোনয়নপ্রত্যাশী
Recent: Mayor Hiron Barisal
Recent: Barisal B M College
Recent: Tender Terror
Kuakata News

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
আমাদের বরিশাল ২০০৬-২০২০

প্রকাশক ও নির্বাহী সম্পাদক: মোয়াজ্জেম হোসেন চুন্নু, সম্পাদক: রাহাত খান
৪৬১ আগরপুর রোড (নীচ তলা), বরিশাল-৮২০০।
ফোন : ০৪৩১-৬৪৫৪৪, ই-মেইল: hello@amaderbarisal.com