Warning: Trying to access array offset on null in /home/amdrbari/domains/amaderbarisal.com/public_html/wp-content/themes/newsbee/news.php on line 6
মনপুরার কোস্টগার্ডের অভিযান সত্ত্বেও ধরাছোয়ার বাইরে নৌডাকাতরা
Warning: Trying to access array offset on null in /home/amdrbari/domains/amaderbarisal.com/public_html/wp-content/themes/newsbee/news.php on line 6
মোঃ মাহবুবুল আলম শাহীন, মনপুরা :: ভোলার মনপুরার উত্তর পাশে অবস্থিত ঢাল চর, কলাতলীর চর, কাজীর চর সংলগ্ন মেঘনায় নৌডাকাত স্বপন বাহিনীর সদস্যরা এখনো ধরাছোয়ার বাইরে। কোষ্টগার্ড-পুলিশের যৌথ অভিযানে বর্তমানে গাঢাকা দিয়েছে স্বপন বাহিনীর প্রায় অর্ধশতাধিক সদস্য। তবে যেকোন সময় পুনরায় স্বপন বাহিনী তাদের পুরনো রুপে ফিরে আসতে পারে এমন আশংকায় দিন কাটছে অসহায় জেলেদের।
বিগত কয়েক মাস ধরে উপজেলার উত্তর পাশের মেঘনায় জেলেদের উপর রাম রাজত্ব কায়েম করে নৌডাকাত স্বপন বাহিনী। নৌডাকাতদের অত্যাচারে স্থানীয় হাজার হাজার জেলের মেঘনায় ইলিশ শিকার প্রায় অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে। জেলেরা মেঘনায় মাছ ধরতে গেলেই স্বপন বাহিনীর সদস্যরা জেলেদের জাল, ট্রলার, মাছ লুট করে নিয়ে যায়। অনেক সময় জেলেদের ধরে নিয়েও মোটা অংকের মুক্তিপন দাবী করে। নৌডাকাতদের অত্যাচার থেকে জেলেদের বাঁচাতে ইতিপূর্বে কয়েকবার পুলিশ অভিযান চালালেও নৌডাকাত নির্মূল করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় জেলেদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ডাকাতদের আস্তানার ঠিক পূর্ব পাশে হাতিয়া কোস্ট গার্ড, উত্তর পাশে রামগতি কোস্ট গার্ড আর দক্ষিনে উপজেলা সদরের সুসজ্জিত পুলিশ দায়িত্ব পালন করলেও মাঝখানে বসে ডাকাতদল প্রকাশ্যে মুক্ত চিন্তায় জাল, ট্রলার লুট করছে আর চরের স্থলভাগে উঠে মানুষের ক্ষতি করে যাচ্ছে । জেলেরা আরও বলেন স্বপন বাহিনীর অত্যাচারে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাল চরে গরু, মহিষ রাখতে হাতিয়া থেকে আসা রাখালদের ৪০/৫০ জন এবং মনপুরার গুটি কয়েকজনকে নিয়ে এ নৌডাকাত নেটওয়ার্ক। মির্জাকালু থেকে এসে বসতি স্থাপন করা উপজেলার হাজীর হাট ইউনিয়নের জংলার খাল এর স্বপন প্রথমে ডাকাত সর্দার মজিদের সেকেন্ড কমান্ড হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিল পরে মজিদকে হত্যা করে নিজেই এই নৌডাকাত দলের নের্তৃত্ব দিচ্ছে। নৌডাকাতরা প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে ঢাল চর, কাজীর চর, কলাতলীর চরে বিচরন করলেও তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার জো নেই কারও। ডাকাতদের ভয়ে স্থানীয় যুবতি মহিলা, উঠতি বয়সী মেয়েদের নিয়ে অভিভাবক’রা সর্বদা আতংকগ্রস্থ থাকেন। প্রায় কয়েক মাস পূর্বে এক নববধূকে অপহরন করে নিয়ে ৩ দিন পর ফিরিয়ে দিয়েছে বলে বিস্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। নৌডাকাতরা জেলেদের জাল, ট্রলার,মাছ লুট করে আস্তানায় নিয়ে যায়। পরে জাল, মাছ অন্যত্র বিক্রি করে দেয় তারা। বর্তমানে নৌডাকাতরা মূর্তিমান আতংকে রুপ ধারন করায় মনপুরার মেঘনায় মাছ শিকার করতে পারছেনা স্থানীয় জেলেরা।
অবশেষে গত ১০ জুলাই মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে ভোলা জোনাল কমান্ডার জামিল সিদ্দীকির নের্তৃত্বে কলাতলী ক্যাম্পের পুলিশ ও জনতার সহয়তা নিয়ে ঢালচর, কাজীরচর, কলাতলীর চর ও মৌলভীর চর সংলগ্ন মেঘনায় সাড়াশি অভিযান চালায়। পুলিশ কোস্টগার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে মেঘনায় থাকা নৌডাকাতরা বিভিন্ন চরে পালাতে থাকে। পরে স্থানীয় ভূক্তভোগী জনতা হেজু(২৭), ছালাউদ্দিন(৩০), নুর্বউদ্দিন(২৫) ও আবুতাহের (৩২) নামে ৪ নৌডাকাতকে ধরে পুলিশ কোস্টগার্ডের হাতে সোর্পদ করে। এসময় পুলিশ ডাকাতদের আস্তানা থেকে ১১ রাউন্ড তাজা গুলি, ১ টি কার্টুজ, ১ টি আতশবাজি উদ্ধার করেছেন বলে জানা গেছে।
গত কয়েকদিন ধরে পুলিশ কোষ্ট গার্ড অভিযান পরিচালনা করায় স্বপন বাহিনীর সদস্যরা গা ঢাকা দিয়েছে। তারা পুলিশ-কোষ্ট গার্ডের নজর ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে আছে। তবে তাদের দলবলসহ আটক করতে না পারলে পুনরায় ফিরে এসে তারা তান্ডব চালাতে পারে এমন আশংকায় জেলেদের মাঝে আতংক কাটছেনা।
এ ব্যাপারে ১ নং মনপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, নৌডাকাত স্বপন বাহিনীকে ধরার জন্য গত ২ /৩ দিন অভিযান পরিচালিত হয়েছে। আমরা অভিযান পরিচালনায় সর্বাত্মক সহযোগীতা করেছি। কিন্তু বাহিনী প্রধানসহ উল্লেখযোগ্য কাউকে আটক করতে না পারায় জেলেরা এখনো আতংকিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অপারেশনের নের্তৃত্বে থাকা ভোলা কোস্টগার্ডের লে. জাহাঙ্গীর বলেন, নৌডাকাতদের পুরোদমে নির্মূলের উদ্দেশ্যে আমরা অভিযানে নেমেছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ ব্যাপারে মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ নরেশ কর্মকার আমাদের বরিশাল ডটকমকে বলেন, আটককৃত নৌডাকাতদের আগের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। নৌডাকাদের গডফাদার না ধরা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
–
(আমাদের বরিশাল ডটকম/মনপুরা/মাআ/তাপা)
সম্পাদনা: সেন্ট্রাল ডেস্ক |