শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সাত কোটি টাকার কাজ ‘গুছ’ করলেন ছাত্র-যুবলীগ নেতারা
শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাত কোটি টাকার কাজ ‘গুছ’ করার অভিযোগ উঠেছে বরিশালের ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। সোমবার সকালে দরপত্র জমা দিতে গেলে সাধারণ ঠিকাদারদের বাধা দিয়ে নিজেদের মধ্যে ওই কাজ ‘গুছ’ করে নেন ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
ভুক্তভোগী একাধিক ঠিকাদার জানিয়েছেন, দরপত্র বিক্রির শেষ দিন রোববার পর্যন্ত ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডার সিজান বাহিনীর পাহাড়ার কারণে অনেক ঠিকাদারই সিডিউল ক্রয় করতে পারেননি। যারা কিনতে পেরেছেন তারা সোমবার জমা দিতে গেলে ছাত্রলীগ সভাপতি জসিম উদ্দিন ও সিজান বাহিনীর বাধার মুখে জমাদান করতে পারেনি।
শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ কামরুল ইসলাম জানান, ‘দপ্তরের ভেতর বসে কেউ দরপত্র কেনা বা জমাদানে বাধা দেয়নি। তবে দপ্তরের বাহিরে কিছু হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সোমবার বেলা ১১ টায় ভাটার খালস্থ্য শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তরে দরপত্র জমা দিতে গেলে ঠিকাদারদের গেটেই আটকে দেয় ছাত্রলীগ যুবলীগ নেতাকর্মীরা। এমনকি ১৭ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলামকেও বাধা দেয় ছাত্রলীগের মিলন, জুবায়ের আলম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার জানান, তিনি কাজ কিনতে গেলে প্রথমে তাকে বাধা দেয়া হয়। পরে চেষ্টা তদবির করে ৪ নম্বর ও ৭ নম্বর গ্রুপের কাজ বাদ অন্য গ্রুপের কাজের জন্য দরপত্র কিনেন তিনি। কিন্তু সোমবার তিনি দরপত্র জমা দিতে গেলে তাকে গেট থেকেই বিদায় করে দেয় যুবলীগ ক্যাডার সেজান, ছাত্রলীগের জসিম, যুবায়ের সহ অন্যান্যরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের ১১ গ্রুপের এ কাজের ৪ নম্বর ও ৭ নম্বর গ্রুপের কাজ মহানগর আ’লীগের এক নেতার ভাইয়ের জন্য রেখে অন্য কাজগুলো ‘গুছ’ করেছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের তিনটি পৃথক গ্রুপ। আর এ ‘গুছ’ প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দেন যুবলীগের সিজান, মাহামুদুল হাসান বাবু ও ছাত্রলীগ সভাপতি জসিম উদ্দিনের বাহিনী। এ তিনটি গ্রুপের বাহিরের কোন ঠিকাদার এ কাজের দরপত্র জমা দিতে পারেননি।
শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তর বরিশাল অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বাসার আমাদের বরিশাল ডটকমকে জানান, ‘বরিশাল ও ঝালকাঠিতে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য গত (ডিসেম্বর) মাসে ৬ কোটি ৭১ লাখ টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। ১১ গ্রুপের এ দরপত্র জমাদানের শেষ দিন ছিলো আজ (সোমবার)।’
তিনি দাবি করেন, তার কার্যালয়ে প্রবেশে কাউকে বাধা দেয়া হয়নি। তবে নেপথ্যে দপ্তরের বাহিরে কিছু হয়েছে কিনা তা তাদের দেখার বিষয় নয় বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী।
এদিকে জসিম উদ্দিন সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘কাজ না পেয়ে কিছু ঠিকাদার মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছেন।’
সম্পাদনা: সেন্ট্রাল ডেস্ক |