বরিশালে টেন্ডার নিয়ে আ.লীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ নিজস্ব প্রতিবেদক
বরিশালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের (এলজিইডি) ২২ কোটি টাকার টেন্ডার নিয়ে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত নগরীর বান্দ রোডস্থ এলজিইডির কার্যালয়ের সামনের এই সংঘর্ষে অন্তত দুইজন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মঈন তুষারকে কার্যালয়ে তুলে নিয়ে গেছে র্যাব সদস্যরা।
এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ১৮ ডিসেম্বর জেলার বানারীপাড়া, বাবুগঞ্জ এবং উজিরপুরে সড়ক উন্নয়নের আট গ্রুপের ২২ টাকার টেন্ডার আহ্বান করেন নির্বাহী প্রকৌশলী। মঙ্গলবার দরপত্র বিক্রির শেষ দিন পর্যন্ত এই কাজের বিপরীতে আগ্রহী ঠিকাদাররা ২৭০ দরপত্র ক্রয় করেন। বুধবার ছিল দরপত্র জমাদানের শেষ দিন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এলজিইডি’র টেন্ডার বাগাতে বুধবার সকাল থেকে বরিশাল জেলা-মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে এলজিইডি কার্যালয়ে অবস্থান নেয়।
এ সময় র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের ভাই বরিশাল মহানগর যুবলীগের নেতা জিয়াউল হক বিপ্লব দরপত্র জমা দিতে গেলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের মারধর করে। এক পর্যায়ে তার কাছ থেকে একটি দরপত্র ছিনিয়ে নেয় ছাত্রলীগের মো. আরিফ হোসেন।
এছাড়া বরিশাল মহানগর যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. শাহীন সিকদারের পক্ষে দরপত্র জমা দেওয়ার সময় ১৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম মিরাজকে মারধর করা হয়।
মারধরের শিকার নেতাকর্মীরা পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিলে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে লাঠিচার্জ করে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এদিকে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের ভাই জিয়াউল হক বিপ্লবের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া দরপত্র উদ্ধারে র্যাব-৮ এর ক্যাপ্টেন আবুল বাশারের নেতৃত্বে একটি দল ছাত্রলীগ নেতা মো. আরিফ হোসেনকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। র্যাবের দলটি প্রকৌশল কার্যালয় ও নগরীর নতুন বাজার এলাকায় ওই ছাত্রলীগ নেতার বাসায় তল্লাশি চালায়।
অপরদিকে, বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের নেতা মঈন তুষারকে ধরে র্যাবের কার্যালয়ে নিয়ে যায় ব্যাব-৮ এর একটি দল।
তবে তুষারকে আটক নয়; সংঘর্ষের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে কার্যালয়ে আনা হয়েছে বলে জানালেন র্যাবের ডিএডি মো. রুহুল আমিন।
এ বিষয়ে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) গোলাম রউফ খান বলেন, ‘খবর পেয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য পুলিশ লাঠিচার্জ করলে সবাই সটকে পড়ে। তবে কর্তৃপক্ষ চাইলে বা কারো পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া ঝামেলা হওয়ায় পুনরায় টেন্ডার জমার দিন ধার্য করা হবে।’
সম্পাদনা: বরিশাল ডেস্ক |