বরিশালে দরপত্র জমা নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ নিজস্ব প্রতিবেদক
বরিশালে প্রায় ছয় কোটি টাকার কাজের দরপত্র জমা নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুন) সকালে নগরীর জিলা স্কুল মোড় সংলগ্ন গণপূর্ত অধিদপ্তরের কার্যালয়ে এ সংঘর্ষের সময় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কক্ষে ভাংচুর চালায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের চারজন আহত হয়েছেন। আহতরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
গণপূর্ত কার্যালয় সূত্র জানায়, গণপূর্ত বিভাগের অধীনে বরিশাল মেরিন একাডেমির কোয়ার্টার ভবন নির্মাণ কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। এই কাজের দরপত্র জমার শেষ দিন ছিল মঙ্গলবার। পাঁচ কোটি ৯০ লাখ ৬৬ হাজার টাকার এই কাজের জন্য ১৮টি সিডিউল বিক্রি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকালে বিএম কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মঈন তুষার দুইটি দরপত্র জমা দিয়ে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে তত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় তারা অন্য ঠিকাদারদের দরপত্র জমাদানে বাধা দেন। এর কিছুক্ষণ পর সাড়ে দশটার দিকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে গণপূর্ত কার্যালয়ে আসলে তাদেরও দরপত্র জমা দিতে বাধা দেয় তুষার গ্রুপ।
এ সময় দরপত্র জমা দেয়া নিয়ে রাজ্জাক ও মঈন তুষারের মধ্যে বাকবিতণ্ডা থেকে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষের সময় তত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কক্ষের আসবাবপত্র ভাংচুর করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা কার্যালয়ের বাইরে রাখা একটি মোটরসাইকেলও ভাংচুর করে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে মঈন তুষারকে ঘিরে ধরে মারধর করে তার জামাকাপড় খুলে ফেলে রাজ্জাক সমর্থকরা।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে দুইপক্ষকে কার্যালয় এলাকা থেকে তাড়িয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এ ব্যাপারে মঈন তুষার বলেন, ‘আমরা দরপত্র জমা দিতে গেলে রাজ্জাকের লোকজন আমাদের বাধা দেয়। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।’
অপরদিকে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা দরপত্র জমা দিতে গণপূর্তের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কক্ষে গেলে আগে থেকে ওই কক্ষে বসা থাকা মঈন তুষার আমাদের দেখে অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিতে শুরু করে। এ সময় তুষার শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর দোহাই দিয়ে দরপত্র জমা দিতে বাধা দেয়। একপর্যায়ে আমার গায়ে হাত তোলে, চেয়ার তুলে মারতে চায়। পরে আমাদের সঙ্গে থাকা ছোট ভাইয়েরা তুষারকে ধরে গণধোলাই দেয়।’
গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনির হোসেন আমাদের বরিশাল ডটকম’কে জানান, ঠিকাদারী কাজের দরপত্র জমা দিতে আসে কয়েকজন ঠিকাদার। এ সময় আরো কয়েকজন তার কক্ষে প্রবেশ করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষকারীরা তার কক্ষেও ভাংচুর চালায়। তবে সংঘর্ষকারীরা ছাত্রলীগের কি না, তা তিনি জানেন না বলে দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন আমাদের বরিশাল ডটকম’কে জানান, দরপত্র জমা দেয়া নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে একটু ঝামেলা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সম্পাদনা: বরিশাল ডেস্ক |