Current Bangladesh Time
Tuesday October ১৪, ২০২৫ ১:১১ PM
Barisal News
Latest News
Home » তালতলী » বরগুনা » ফাতরার বন: বনের শত শত গাছ কর্মকর্তাদের পেটে
১৩ October ২০২৫ Monday ১১:৪১:৫৫ AM
Print this E-mail this

ফাতরার বন: বনের শত শত গাছ কর্মকর্তাদের পেটে


  • এসব গাছের মধ্যে কেওড়া, গেওয়া, সুন্দরী, বাবলা ও গরান রয়েছে।
  • ৩ বছর ধরে এসব গাছ মরে যাচ্ছে।
  • সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
  • তদন্তে সত্যতা পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: বন সংরক্ষক

তালতলী ((বরগুনা) প্রতিনিধি:

তিন বছর ধরে বরগুনার তালতলীর ফাতরার বনের উত্তর নিদ্রার চরের শত শত বিভিন্ন প্রজাতির বড় গাছ মরে যাচ্ছে। তবে সেগুলো বিক্রির কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বন বিভাগ। অভিযোগ উঠেছে, কিছু অসাধু কর্মকর্তা সেসব গাছ চোরাই পথে বিক্রি করছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি, তাঁরা গাছ মরে যাওয়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। আর চোরাই পথে গাছ বিক্রির সত্যতা পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন।

জানা গেছে, তালতলী উপজেলার বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষা প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা ম্যানগ্রোভ ফাতরার বনাঞ্চল। ৪০৪৮ দশমিক ৫৮ হেক্টর জমিরে গড়ে ওঠা এ বনে রয়েছে কেওড়া, সুন্দরী, গরান, গেওয়া, রেইনট্রি, করমজা, বাবলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। শত বছরের এ গাছগুলো এখন মূল্যবান গাছে পরিণত হয়েছে। ফাতরার বনকে বন বিভাগ সকিনা ও নিশানবাড়িয়া দুটি বিটে বিভক্ত করা হয়েছে। এ বনের সকিনা বিটের উত্তর নিদ্রার চর অন্তত ১০০ হেক্টর জমি নিয়ে বিস্তৃত। এই বনে কেওড়া, গেওয়া, সুন্দরী, বাবলা ও গরানগাছ রয়েছে। এর মধ্যে তিন বছর ধরে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ মরে গেছে। বন বিভাগের দাবি, সাগরের তুফানে গাছের গোড়ায় বালু জমা হয়ে শ্বাসমূল আটকে গেছে। ফলে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে না পারায় গাছগুলো মরে যাচ্ছে।

গত শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, ফাতরার বনের একাংশ উত্তর নিদ্রার চরে শত শত গাছ মরে দাঁড়িয়ে আছে। গাছের ডালপালা শুকিয়ে গেছে। অনেক গাছের বৃহত্তম অংশ পচে যাচ্ছে। অনেক গাছ বালুর ওপরে লুটিয়ে পড়ে আছে। স্থানীয় কাঠুরেরা ওই গাছ জ্বালানি কাঠ হিসেবে সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছে। বন বিভাগের লোকজন শুধু দর্শক।

স্থানীয় নজরুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, ‘গাছ মারা গেলে বন বিভাগের লোকজনের লাভ। তাঁরা গোপনে অল্প অল্প করে ওই গাছ চোরাই পথে বিক্রি করে দিচ্ছেন। সরকারি কোটি কোটি টাকার গাছ তাঁরা লোপাট করছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘উত্তর নিদ্রা চরে অসংখ্য মূল্যবান গাছ গত তিন বছর ধরে মরে যাচ্ছে। ওই গাছ বন বিভাগের লোকজন বিক্রি করছেন না। এতে যেমন সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে চরে নতুন করে গাছ রোপণের সুযোগও থাকছে না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চরে বসবাসরত কয়েকজন বলেন, ‘বন বিভাগ ২৭টি গাছ বিক্রি করছে। ওইগুলো লোকদেখানো মাত্র। ওই গাছ বিক্রির আড়ালে কতশত গাছ বিক্রি করছে, তার খবর কে রাখে? চোখের সামনে দেখছি, বনখেকোরা বিভিন্নভাবে গাছ নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বন বিভাগের লোকজন দেখেও তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’ দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাঁদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বনরক্ষী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বনের বড় বড় গাছ মরে গেছে, চোখে দেখেও কিছু করতে পারছি না। এখানে আমাদের কিছুই করণীয় নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নিলে আমরা কী করব?’

সকিনা বিটের বিট কর্মকর্তা রাহিমুল ইসলাম বলেন, ‘বনের গাছ মরে যাওয়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতনকে জানিয়েছি। তারাই ওই গাছের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘মরে যাওয়া গাছ বিক্রি করলে চরে নতুন করে গাছ রোপণ করা যেত।’

তালতলী রেঞ্জ কর্মকর্তা মতিউর রহমান বলেন, ‘গাছের গোড়ায় বালু জমা হয়ে শ্বাসমূল আটকে যাচ্ছে। ফলে গাছ শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে না পেরে এবং গাছের বয়স বেশি হওয়ার কারণেও মারা যাচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাদের সিদ্ধান্ত মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চোরাই পথে কিছু গাছ বিক্রির অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পটুয়াখালী উপকূলীয় বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক আমির হোসেন বলেন, ‘উত্তর নিদ্রা চরের গাছ মারা যাওয়ার বিষয়টি আমি জানি না। খোঁজখবর নিয়ে মরে যাওয়া গাছের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বন থেকে চোরাই পথে গাছ বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। তদন্তে সত্যতা পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পটুয়াখালী উপকূলীয় বন বিভাগের উপ-বন সংরক্ষককে ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘বন বিভাগের লোকজনকে বললেও তাঁরা আমলে নিতে চান না।

সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক

শেয়ার করতে ক্লিক করুন:

আমাদের বরিশাল ডটকম -এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
(মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। amaderbarisal.com-এর সম্পাদকীয় অবস্থানের সঙ্গে এসব অভিমতের মিল আছেই এমন হবার কোনো কারণ নেই। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে amaderbarisal.com কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না।)
‘বৈষম্য আর আধিপত্যবাদের আগ্রাসন থেকে সেফ এক্সিট দরকার’-বরিশালে উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম
বরিশাল বিভাগের একুশ আসনে প্রায় চূড়ান্ত বিএনপির মনোনয়ন
নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও চলছে ইলিশ নিধন
দক্ষিণের ৭টি অঞ্চলে ঝড়ের আভাস
বরিশালে বিএনপি নেতাসহ দুই ভাইয়ের ধর্ষণে অন্ত:সত্ত্বা গৃহপরিচারিকা
Recent: Mayor Hiron Barisal
Recent: Barisal B M College
Recent: Tender Terror
Kuakata News

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
আমাদের বরিশাল ২০০৬-২০২০

প্রকাশক ও নির্বাহী সম্পাদক: মোয়াজ্জেম হোসেন চুন্নু, সম্পাদক: রাহাত খান
৪৬১ আগরপুর রোড (নীচ তলা), বরিশাল-৮২০০।
ফোন : ০৪৩১-৬৪৫৪৪, ই-মেইল: hello@amaderbarisal.com