কাজ ‘ভাগ-বাঁটোয়ারা’ নিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগ মারামারি নিজস্ব প্রতিবেদক
শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাত কোটি টাকার কাজ ‘ভাগ-বাঁটোয়ারা’ করাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে মারামারি হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ডস্থ শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বাশার হাওলাদারের বাসভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আহত হয়েছে কথিত যুবলীগ নেতা সোয়েব আহাদ সিজান (৩০)। তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরে-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মারামারির ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা-কর্মী সকলেই বরিশাল-৫ আসনের সাংসদ ও সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরনের অনুসারী।
শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ কামরুল ইসলাম জানান, বরিশাল ও ঝালকাঠিতে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য গত (ডিসেম্বর) মাসে ১১ গ্রুপের ৬ কোটি ৭১ লাখ টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর বিপরীতে জমাদানের শেষ দিন সোমবার পর্যন্ত ১০৬টি দরপত্র জমা পড়েছে।
জানা গেছে, ১১ গ্রুপের এ কাজগুলো ‘গুছ’ করেছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের তিনটি পৃথক গ্রুপ। এ তিনটি গ্রুপের বাহিরের কোন ঠিকাদার এ কাজের দরপত্র জমা দিতে পারেননি।
১১ গ্রুপের মধ্যে বিএম কলেজ অস্থায়ী কর্মপরিষদের নেতাকর্মীরা সাতটি গ্রুপের কাজের বিপরীতে দরপত্র ও পে-অর্ডার জমা দেয়। অপরদিকে সোয়েব আহাদ সিজান আটটি গ্রুপের বিপরীতে দরপত্র জমা দিলেও পে-অর্ডার কাটে মাত্র চারটির।
মঙ্গলবার বাকি চারটি কাজের পে-অর্ডার জমা দিতে সিজান নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বাশার হাওলাদারের বাসভবনে গেলে কর্মপরিষদের সহ-সভাপতি মঈন তুষার, ক্রীড়া সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ মুন্না, ছাত্র মিলনায়তন সম্পাদক জুবায়ের আলম, নুর আল সাঈদী সহ ৭-৮জন তাকে (সিজানকে) বাধা দেয়। এনিয়ে দু’পক্ষের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তা মারামারিতে রূপ নেয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ব্যাপারে সাংসদ ও সাবেক মেয়র শওকত হোসেনের ভাগ্নে পরিচয়দানকারি সোয়েব আহাদ সিজান জানান, ‘ব্যক্তিগত কাজে নির্বাহী প্রকৌশলীর বাসায় গেলে মঈন তুষার ও মুন্না তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমার ওপর হামলা চালায়।’ টেন্ডারবাজিতে বাধা দেয়ায় এ হামলা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
অপরদিকে কর্মপরিষদের ক্রীড়া সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ মুন্না হামলার কথা অস্বীকার করে জানান, ‘সিজান দরপত্রের সাথে পে-অর্ডার ছাড়া দরপত্র জমা দিয়ে একদিন পর নিয়ম বহির্ভূতভাবে পে-অর্ডার জমা দিতে প্রকৌশলীর বাসায় গিয়েছিলো। আমরা এসবের কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে (সিজান) আমাদের ওপর হামলা চালালে আমরা তা প্রতিহত করি।’
এ ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বাশার হাওলাদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বাসার বাইরে মারামারি হয়েছে।’ তবে মারামারির কারণ সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন তিনি।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ:
সাত কোটি টাকার কাজ ‘গুছ’ করলেন ছাত্র-যুবলীগ নেতারা
সম্পাদনা: সেন্ট্রাল ডেস্ক |